বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) আজ দুপুরে হঠাৎ হাজির হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি তদন্ত দল। মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অবস্থিত বিসিবি কার্যালয়ে এই আকস্মিক আগমন বিস্মিত করেছে বোর্ড কর্মকর্তাদের।
দুদক জানিয়েছে, তিনটি নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তারা বিসিবির কাছে তথ্য জানতে গেছে। তদন্তের বিষয়গুলো হলো—মুজিব শতবর্ষ উদযাপনের ব্যয়ের হিসাব, বিপিএলের তৃতীয় থেকে দশম আসর পর্যন্ত টিকিট বিক্রির আয়, এবং তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেটে এন্ট্রি ফির অনিয়ম।
দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন সাংবাদিকদের জানান, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বিসিবির আয়োজনে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানানো হলেও মাত্র ৭ কোটি টাকার ব্যয়ের সুনির্দিষ্ট হিসাব পাওয়া গেছে। বাকি ১৮ কোটির বেশি খরচের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। এ সংক্রান্ত নথিপত্র ফাইন্যান্স বিভাগের কাছে চাওয়া হয়েছে।
বিপিএল টিকিট বিক্রির আয়ে অনিয়মের অভিযোগও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আল আমিন বলেন, 'বিপিএলের ১১তম আসরে টিকিট বিক্রি হয়েছে ১৩ কোটি টাকার, অথচ তৃতীয় থেকে দশম আসর পর্যন্ত পুরো আটটি মৌসুমে আয় দেখানো হয়েছে মাত্র ১৫ কোটি টাকা।'
তিনি আরও জানান, বিসিবি বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে টিকিট বিক্রির দায়িত্ব দিত এবং সেই অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আয় হিসেবে নিত। তবে এই পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেটে এন্ট্রি ফির বিষয়েও তদন্ত চলছে। দুদকের তথ্যমতে, বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসানের সময় ৫০ হাজার টাকা এন্ট্রি ফি একলাফে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়। এতে অধিকাংশ দলই প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ায়, শুধুমাত্র ২-৩টি দল অংশ নেয়। চলতি বছর ফি কমিয়ে ১ লাখ টাকা করায় ৬০টি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে।
দুদকের মতে, আগে অংশগ্রহণের সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতিযোগিতাকে সীমিত করা হয়েছিল কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, 'দুদক কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে তথ্য চেয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে নির্দেশ দিয়েছি, যেন তারা সম্পূর্ণ সহযোগিতা করে।'
তিনি আরও বলেন, 'ম্যানেজমেন্ট টিম হিসেবে আমরা পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করি এবং সেই অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।'
বিডি প্রতিদিন/মুসা