মানের দিক দিয়ে খুব একটা পার্থক্য নেই। বলা যায় সমান সমানই। তার পরও ফুটবলে বাংলাদেশ কেন জানি ভারতের সঙ্গে পেরে উঠছে না। ১৯৮৫ সালে সাফ গেমসের ফাইনাল দিয়ে দুই দেশের জাতীয় দলের লড়াই শুরু। অধিকাংশ ম্যাচেই জয় পেয়েছে ভারত। বাংলাদেশের জয় হাতেগোনা বলা যায়। লাল-সবুজের দল কেন পারে না এটি কোটি টাকার প্রশ্ন। ভয়টা কীসের? কেন ম্যাচের আগেই হেরে যাওয়ার মনোভাব? জুজুর ভয় কি এবার কাটবে? মঙ্গলবার ঢাকায় এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশ ফিরতি লড়াইয়ে ভারতের বিপক্ষে খেলবে। দেশবাসীর প্রত্যাশা এবার পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙবেনই জামালরা। ম্যাচ জিতলেও লাভ হবে না। আগেই চূড়ান্ত পর্বে খেলার আশা শেষ। ভারত ও সিঙ্গাপুরকে হারালেও কিছু আসে যাবে না বাংলাদেশের। তার পরও ভারত ম্যাচটি বাংলাদেশের কাছে ফাইনাল। জিতলে অনেক হতাশা দূর হয়ে যাবে। খুলে যাবে বন্ধ দুয়ার। নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে হামজার বাইসাইকেলের গোলটি অনেক দিন মনে রাখবেন দর্শক। জাতীয় দলের সাবেক তারকা ফুটবলাররা গোলটিকে আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বলছেন। তার পরও আফসোস নেপালকে হারানো যায়নি। হামজার এমন দর্শনীয় গোল ভারত ম্যাচে বাংলাদেশকে অনুপ্রাণিত করবে এ নিয়ে সন্দেহ নেই। সত্যি বলতে কি হামজা খেলার পর বাংলাদেশের খেলার চেহারা বদলে গেছে। তাই মঙ্গলবার মঙ্গল বয়ে আসুক এ প্রত্যাশা সবারই। প্রশংসা করার মতো গোল করেছেন হামজা। কিন্তু যে ভারত ঘিরে ফুটবলে হতাশা, তাদের বিপক্ষেও বাংলাদেশের সেরা গোল আছে; যা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ১৯৮৫ সালে ঢাকায় সাফ গেমসের ফাইনালে টাইব্রেকারে ভারত সোনা জিতেছিল ঠিকই, তবে প্রথমার্ধে আসলামের যে দর্শনীয় হেডে বাংলাদেশ এগিয়ে গিয়েছিল, তা কি ভুলবার মতো?
১৯৯৯ সালে কাঠমান্ডু সাফ গেমস সেমিফাইনালে শাহজাদা টিপুর চোখ ধাঁধানো গোল কি ভোলা যাবে? ম্যাচে স্পষ্ট ফেবারিট ছিল ভারত। তার পরও টিপু ৩৫ গজ দূর থেকে অসাধারণ গোল করে ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর গোলে জয়লাভ করে বাংলাদশ ফাইনালে চলে যায়। ২০০৩ সালে ঢাকায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে মতিউর মুন্নার গোল। সল্টলেক স্টেডিয়ামে সাদ উদ্দিনের হেডের গোল কি মুছে যাওয়ার মতো? ১৯৭৭ সালে আগা খান গোল্ডকাপে অল ইন্ডিয়া নাম হলেও ভারত জাতীয় দল খেলতে আসে। ঢাকা মোহামেডানের কাছে তারা ১-২ গোলে হেরে যায়। অধিনায়ক গুরুদেব সিংকে কাটিয়ে মোসাব্বের যে গোলটি করেন তাকেও সেরার তালিকায় রাখতে হবে। জাতীয় দলের সেরা গোলের প্রসঙ্গ উঠলে অবশ্যই ভারতের বিপক্ষে গোলগুলো আসবে। অতীত হলেও এসব গোলও ১৮ নভেম্বর রাকিবদের উজ্জীবিত করবে।