বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) পার্লামেন্টের সদস্য অ্যাবিগেল বয়েড।
তিনি বলেন, নির্বাচন ঘিরে অনিশ্চয়তা, সহিংসতা ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা পরিস্থিতিকে বিপজ্জনক করে তুলেছে। এ পরিস্থিতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব প্রার্থীর নিরাপত্তার দাবি জানান তিনি। সম্প্রতি দেশটির আইনসভায় জমা দেওয়া এক নোটিশ অব মোশনে তিনি এসব কথা বলেন।
মোশনে বয়েড বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে অনুষ্ঠিত ১২টি নির্বাচনের মধ্যে মাত্র চারটি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মতে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত। সেই নির্বাচনগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে পতন হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একনায়কতান্ত্রিক প্রভাব ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের অভাব ত্রয়োদশ নির্বাচনকে নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মোশনে সাম্প্রতিক সহিংসতার কথাও উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৮ আসনের মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর ওপর গুলির ঘটনাকে উদ্বেগজনক রাজনৈতিক টার্গেটিংয়ের উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেন বয়েড। বলেন, মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে গণহারে আটক ও বিরোধীদের ওপর দমনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটাধিকার পেলেও জটিল প্রক্রিয়া তাদের ভোট প্রয়োগে বড় বাধা হতে পারে। নতুন অ্যাপ-ভিত্তিক (পোস্টাল ভোট বিডি) ব্যবস্থার ওপর পর্যবেক্ষকরা সম্ভাব্য কারচুপির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন নিশ্চিত করতে একাধিক দাবি জানান বয়েড। তার দাবিগুলো হলো- বাংলাদেশ ইস্যুতে অস্ট্রেলিয়া সরকারকে সক্রিয় হওয়া, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে চাপ প্রায়োগ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব প্রার্থীর নিরাপত্তা, চলাফেরা ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা; দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করা; মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় ভূমিকা রাখা; প্রবাসীদের জন্য ডাকভোট ব্যবস্থাকে নিরাপদ ও কারচুপিমুক্ত করতে সহযোগিতা করা।
মোশনে আরও বলা হয়, ২০২৫ সালের ১৮ জুন অস্ট্রেলিয়া প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক জেনারেল ইলেকশন সাপোর্ট (ব্যালট) প্রকল্পে অংশ নেয়। যা জাতিসংঘের ইউএনডিপি, ইউএন উইম্যান ও ইউনেস্কোর মতো তিনটি সংস্থার মিলিত প্রচেষ্টার অংশ।