আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্যই শুধু মোহাম্মদ আশরাফুলকে ব্যাটিং স্পেশালাইজড কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় বিসিবি। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিম্যান আশরাফুলের নিয়োগের পরপর ক্রিকেট পাড়ায় ভেসে বেড়াচ্ছিল, টাইগারদের সিনিয়র সহকারী কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। গতকাল বিসিবিতে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন সালাউদ্দিন। পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বিসিবি সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজনের কাছে। শোনা যায়, তার ক্রিকেটগুরু নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে তার বর্তমান সম্পর্ক শীতল। পদত্যাগ করলেও তার সঙ্গে বিসিবির চুক্তি ছিল ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করলেও অবশ্য আসন্ন আয়ারল্যান্ড সিরিজে তিনি দায়িত্ব পালন করবেন। এরপরই সরে দাঁড়াবেন।
সালাউদ্দিনের পদত্যাগের বিষয়ে ফাহিম বলেন, ‘তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে আয়ারল্যান্ড সিরিজ পর্যন্ত কাজ করবেন।’ সালাউদ্দিন অবশ্য পদত্যাগের কারণ জানিয়েছেন, তিনি এখন বিষয়টি আর উপভোগ করছেন না, ‘কোচিং করানোটা আমার উপভোগের একটা জায়গা। মাঠই আমার সব। যদি কোনো কারণে সেটা উপভোগ করতে না পারি, তাহলে সরে যাওয়াই ভালো। আমি আমার দায়িত্বটা পালন করছি না।’ সালাউদ্দিন ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে সিমন্সের সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন। তার মাসিক বেতন ছিল ১০ লাখ টাকা। সালাউদ্দিনের পদত্যাগে আশরাফুলকে শুধু ব্যাটিং স্পেশালাইজড কোচ নয়, সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম সফল কোচ সালাউদ্দিন। তার কোচিংয়ে বিপিএলে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। তিনি বিকেএসপির কোচ ছিলেন। তাকে কোচিং গুরু হিসেবে শ্রদ্ধা করেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমরা। এ ছাড়া অন্য ক্রিকেটাররাও তাকে শ্রদ্ধা করেন সফল হোচ হিসেবে। ক্রিকেটারদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে সাফল্য পাওয়ায় তাকে জাতীয় দলের সহকারী কোচ নিয়োগ দেয় বিসিবি। তার কোচিংয়ে জাতীয় দলের ব্যাটারদের পারফরম্যান্সের গ্রাফ ছিল নিম্নগামী। দলের ব্যাটাররা ধারাবাহিক নন। সেজন্য মিডিয়া ধারাবাহিকভাবে তার সমালোচনা করছিল। ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলেছেন, মিডিয়ার সমালোচনা সহ্য করতে পারছিলেন না সালাউদ্দিন। তার বিপক্ষে অভিযোগ রয়েছে, হেড কোচ ফিল সিমন্সকে রেখেই দল পরিচালনা করতেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডের সুপার ওভারে ওপেনিংয়ে সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসানকে পাঠান টিম ম্যানেজমেন্ট। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে পাঠান। অথচ ছন্দে থাকা রিশাদ হোসেনকে পাঠায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। সুপার ওভারের আগে দেখা যায় সিমন্সের উপস্থিতিতে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজকে বুঝাচ্ছিলেন সালাউদ্দিন। বিশেষ করে নাজমুল শান্তকে নামানোর বিষয়টি সমালোচকরা নিতে পারেননি। যা সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। ম্যাচটি হেরে যায় বাংলাদেশ।
আশরাফুলকে বলা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা প্রতিভাবান ক্রিকেটার। তিনি ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ করার আগে কোচেস লেবেল করেছেন। তিনি রংপুর রাইডার্সের সহকারী কোচ ছিলেন। তার হেড কোচ ছিলেন মিকি আর্থার। আশরাফুল ক্যারিয়ারে ৬১ টেস্ট, ১৭৭ ওয়ানডে ও ২৩ টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন।