ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও-পাঁচলাইশ) আসনের প্রার্থী ও দলের মহানগরের আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ গণসংযোগের সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর পূর্ব বায়েজিদের চালিতাতলী এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিনি আহত হন। এসময় সরোয়ার হোসেন বাবলা (৪৩) ও শান্ত নামের দুজন গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে বাবলা নিহত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘এরশাদ উল্লাহ নির্বাচনী প্রচারে ছিলেন। সেখানেই উনিসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদেরকে বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে সরোয়ার নামের একজন মারা গেছে। বাকিরা চিকিৎসাধীন। কে বা কারা কী কারণে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যথাসময়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, সরোয়ার হোসেন বাবলা পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার রাজনৈতিক পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় খুন, চাঁদাবাজি, হত্যাসহ ডজনের বেশি মামলা রয়েছে।
বিএনপির নেতাকর্মী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এরশাদ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে গণসংযোগে বের হন। সন্ধ্যার আগে চালিতাতলি এলাকায় একটি সভা শেষ করে তিনি মাগরিবের নামাজ পড়েন। মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর অজ্ঞাত কিছু দুর্বৃত্ত উপর্যপুরি গুলি চালাতে থাকে। এসময় এরশাদ ছাড়াও সরোয়ার এবং নগরীর পাঁচলাইশ থানার তিন নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শান্ত গুলিবিদ্ধ হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা আগে থেকেই গণসংযোগের বহরে ঢুকে গিয়েছিল। এক পর্যায়ে আচমকা তারা এলোপাথাড়ি গুলি করতে থাকে। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে সরোয়ার মারা যান। পরে এরশাদ, সরোয়ার ও শান্তকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঘটনার সময় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত একটি সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ওই সময় এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর তার কাছে আসে। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আমীর খসরু বলেন, ‘তারা (কারো নাম উল্লেখ না করে) একটি অচলাবস্থা সৃষ্টি করে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। এগুলো হবে। ধৈর্য হারাবেন না। শক্ত থাকবেন। মনোবল শক্ত রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
এদিকে, এরশাদ উল্লাহ’র ওপর হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে এবং বোয়ালখালীর বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেছেন। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এরশাদ উল্লাহ আশঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে। যদিও আহত শান্তের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে নেতাকর্মীরা চিকিৎসকদের বরাতে জানিয়েছেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ