জাতীয় দলের অনুশীলন ক্যাম্প নতুন নয়। কোনো টুর্নামেন্ট বা ম্যাচ হলে অনুশীলন হবেই। ২৫ মার্চ শিলংয়ে এশিয়ান কাপ বাছাই ফুটবলে ভারতের বিপক্ষে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায়। চার দিন অনুশীলন করেই বাংলাদেশ আজ উড়ে যাবে সৌদি আরবে। সেখানে নিবিড়ভাবে ফুটবলাররা অনুশীলন করবেন। এশিয়ান কাপ বাছাই গ্রুপ পর্বে আরও দুই প্রতিপক্ষ হংকং ও সিঙ্গাপুর। তবে এবার ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ ঘিরে প্রস্তুতিতে যে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে তা আগে কখনো হয়নি। এর পেছনে বড় কারণ হচ্ছে হামজা চৌধুরী। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ ফুটবলারের সেদিনই অভিষেক ঘটবে। বিশ্ব ফুটবলে তিনি পরিচিত না হলেও বাংলাদেশের কাছে স্বপ্নের তারকা বলা যায়। জাতীয় দলে প্রবাসী ফুটবলার হিসেবে জামাল ভূঁইয়া ও তারিক কাজী খেলছেন। কিন্তু হামজার মতো মানসম্পন্ন খেলোয়াড়ের প্রথম দেখা মিলবে।
সৌদি আরব থেকে ১৭ মার্চ বাংলাদেশ দলের ঢাকা ফেরার কথা। ২০ বা ২১ মার্চ ভারত যাওয়ার কথা। অনেক দিন ধরেই ভারতের বিপক্ষে জয় নেই বাংলাদেশের। আর ভারতের মাটিতে ভারতকে হারানোটা স্বপ্ন বলা যায়। হামজা যখন খেলছে সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কি?
জামাল ভূঁইয়া, রাকিব হাসান বলেছেন, হামজার অন্তর্ভুক্তিতে বাংলাদেশের শক্তি বাড়ছে। আর গোলরক্ষক মিতুল মারমা বলেছেন, হামজার কাছে অনেক কিছু শেখার আছে। সবই ঠিক, হামজা খেললে দলের শক্তি বাড়বে এবং তার কাছে আসলে শেখার অনেক কিছু আছে। কিন্তু ফুটবল তো ১১ জনের খেলা। এখানে একজন যত বড় মাপের খেলোয়াড় হোক। তার পক্ষে একা কতটা ভালো করা সম্ভব?
আরেকটি ব্যাপার লক্ষণীয় যে, হামজা অনুশীলন বা প্রস্তুতি ছাড়াই ভারতের বিপক্ষে খেলবেন। অনেকে বলতে পারেন যার পৃথিবীর সেরা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তার আবার প্রস্তুতি দরকার আছে। আসলে ব্যক্তি হামজাকে নিয়ে প্রশ্ন নেই। জামাল তাকে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা খেলোয়াড় বলেছেন। সবই মানা যায় তারপরও মানিয়ে নেওযার প্রশ্ন তো রয়েছে। বাংলাদেশের ফুটবল ও ফুটবলার সম্পর্কে তার তো কোনো ধারণা নেই। শোনা যাচ্ছে হামজা ১৮ বা ১৯ মার্চ ঢাকায় আসবেন। ম্যাচে নামার আগে হয়তো ৪/৫ দিন অনুশীলন করবেন। তা কি যথেষ্ট?
যথেষ্ট বলতে হামজার পারফরম্যান্স নিয়ে নয়। সতীর্থদের পজিশন ও পারফরম্যান্স সম্পর্কে কতটা ধারণা নিতে পারবেন। প্রশ্ন উঠেছে হামজা যে মানের খেলোয়াড় মাঠে বাকিরা তার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে খেলতে পারবেন কি না? যদি সতীর্থরা মানিয়ে খেলতে পারেন তাহলে ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো জয়ের আশা করা যায়।
হামজা শতভাগ উজার করে দিলেন, আর সতীর্থরা তার কৌশলই বুঝতে পারলেন না। এতে দল কতটা উপকৃত হবে।
আরেকটি প্রসঙ্গ উঠে আসে কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা কোন কৌশলে দল সাজাবেন। তিনি তো হামজাকেই প্রাধান্য দেবেন। হামজা তার পজিশনে কতটা জ্বলে উঠতে পারবেন তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। সতীর্থরা তাকে ঠিকমতো বল জোগান দিতে ও তার গতির সঙ্গে মানাতে পারবেন কি? সুতরাং হামজা নিয়ে যতই আনন্দ করি তাকে ঘিরে আবার নানা প্রশ্ন রয়েছে। আর তা বাংলাদেশিদের মানিয়ে নেওয়া নিয়ে।