পুরনো বা ক্ষতিগ্রস্ত কোষে যে শক্তি কমে যায়, এবার সেই দুর্বলতা দূর করার নতুন পথ দেখাল যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস এ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। গবেষকেরা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কোষে শক্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলে হৃদরোগ থেকে শুরু করে অ্যালজাইমার পর্যন্ত নানা রোগের চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।
২৮ অক্টোবর প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণায় দেখা যায়, অতিক্ষুদ্র ‘ন্যানোফ্লাওয়ার’ ব্যবহার করে স্টেম সেলের ভেতরে শক্তিকেন্দ্র তৈরি হয়। মানুষের প্রতিটি কোষে যে অংশ শক্তি তৈরি করে তাকে মাইটোকন্ড্রিয়া বলা হয় (কোষের শক্তিকেন্দ্র)। বয়স বাড়লে বা অসুস্থ হলে এ শক্তিকেন্দ্র দুর্বল হয়ে পড়ে।
গবেষণা দলটির নেতৃত্ব দেন ড. অখিলেশ কে. গাহারওয়ার। তার সঙ্গে ছিলেন পিএইচডি গবেষক জন সুকার। তারা মলিবডেনাম ডাইসালফাইড ন্যানোফ্লাওয়ার নামে ফুলের মতো দেখতে ন্যানোকণা ব্যবহার করেন। প্রতিটি ন্যানোফ্লাওয়ারের আকার প্রায় ১০০ ন্যানোমিটার—চোখে দেখা যায় না এমন অতিক্ষুদ্র কণা।
এই ন্যানোফ্লাওয়ার স্টেম সেলকে উদ্দীপিত করে স্বাভাবিকের দ্বিগুণ মাইটোকন্ড্রিয়া তৈরি করতে সহায়তা করে। এর ফলে স্টেম সেলগুলো একটি প্রাকৃতিক ‘শক্তি কারখানা’ হয়ে ওঠে।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই শক্তিবর্ধক স্টেম সেলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত কোষে স্বাভাবিকের তুলনায় দুই থেকে চার গুণ বেশি মাইটোকন্ড্রিয়া পাঠাতে পারে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কোষের শক্তি ফেরে এবং তারা দ্রুত মারা যায় না—এমনকি কেমোথেরাপির মতো কঠিন ওষুধের প্রভাবেও কোষগুলো দীর্ঘক্ষণ টিকে থাকে।
গবেষকেরা আশা করছেন, কোষের শক্তি ফেরানোর এই সহজ ও নির্ভুল পদ্ধতি ভবিষ্যতে হৃদরোগ, স্নায়ুরোগ থেকে শুরু করে বয়সজনিত নানা জটিল রোগের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল