চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ঐতিহ্য কাঁসা শিল্প নব্বই দশকে ব্যাপক হারে ভারতে পাচার হয়ে যাওয়ার কারণে বিলুপ্ত হতে বসেছিল। কিন্তু বর্তমানে ভারতে পাচার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাঁসা শিল্প আবার আশার আলো দেখতে শুরু করেছে। এই শিল্পে ফিরে আসছে সুদিন। তবে বিলুপ্তপ্রায় এই শিল্পের অনেক কারিগরই অন্য পেশায় চলে গেছেন। ফলে কাঁসার কারিগর আর তেমন গড়ে উঠছে না। তার পরও অনেকেই বাপদাদার এই পেশা আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। এলাকার মানুষের কাছে প্রচলিত রয়েছে, আগে দেশগ্রামের লোকজনের ঘুম ভাঙতো মোরগের ডাক শুনে। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নামোশংকরবাটী, আজাইপুর, আরামবাগ, বটতলাহাট ও সোনারমোড় এলাকার ঘুম ভাঙতো কাঁসার কারিগরদের হাতুড়ির টুং-টাং শব্দে। তবে বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর এখন আবার মানুষের ঘুম ভাঙছে কাঁসার কারিগরদের হাতুড়ির টুং-টাং শব্দে। কাঁসা-পিতলের কারিগররা কাঁচামাল আগুনে পুড়িয়ে গলানোর পর তৈরি করেন কাঁসার থালা, বাটি, কলস, জগ, বদনাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবহার্য সামগ্রী। মেয়ের বিয়েতে কাঁসার থালা, বাটি, কলস, জগ, গামলা, বদনা, কড়াইসহ বিভিন্ন জিনিস উপহার দেওয়া ছিল রীতি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাঁসার থালাবাসন ব্যবহারে অসুখ হয় কম। কাঁসা শিল্প টিকিয়ে রাখতে কাঁচামালের দাম কমানোসহ সরকারি সহায়তা প্রয়োজন বলে মনে করেন এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী মো. শরিফুল ইসলাম। এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ মনে করেন জেলার ঐতিহ্য কাঁসা শিল্প টিকিয়ে রাখতে হলে এ খাতে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে। উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নামোশংকরবাটী, আজাইপুর, আরামবাগ, বটতলাহাট ও সোনারমোড় এলাকার কয়েক হাজার পরিবার কাঁসার কারিগর হিসেবে তাদের বাপদাদার পেশা ধরে রেখেছেন। তাই সরকারি সহায়তা পেলে এই শিল্প অতীতের মতো দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যেতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।