জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী একদল সাহসী নারীকে ‘ম্যাডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ডে’ মনোনীত করেছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। তবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি সংহতি ও সম্মান জানিয়ে এ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র ও অন্যতম সংগঠক উমামা ফাতেমা।
শনিবার (২৯ মার্চ) পুরস্কারটি ঘোষণা হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক বার্তায় উমামা এই ঘোষণা দেন উমামা ফাতেমা।
ফেসবুক পোস্টে উমামা ফাতেমা লিখেন, ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক 'International Women of Courage (IWOC) Awards' 2025 এর পক্ষ থেকে জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নারী আন্দোলনকারীদের বিশেষ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এই অ্যাওয়ার্ডের অধীনে 'Madeleine Albright Honorary Group Award' হিসেবে জুলাই অভ্যুত্থানের সকল নারীদের এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে পুরস্কার বিষয়ে কী বলা হয়েছে, তা উল্লেখ করে তিনি লেখেন, নারী আন্দোলনকারীদের কালেক্টিভ স্বীকৃতি আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনের উপর ইসরায়েলের নারকীয় হামলাকে প্রত্যক্ষভাবে এন্ডোর্স করে যাওয়ার জন্য এওয়ার্ডটি ব্যবহৃত হয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা যুদ্ধকে অস্বীকার করে পুরস্কারটি ইসরায়েলের হামলাকে যে প্রক্রিয়ায় জাস্টিফাই করেছে তা পুরস্কারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। যেখানে ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের মৌলিক মানবাধিকার (ভূমির অধিকার) থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। তাই ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি সম্মান রেখে এই পুরস্কার আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যাখ্যান করলাম।
পোস্টে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বিগত সরকারের সহিংস দমননীতির বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি ছিলেন মেয়েরা। তারা অসাধারণ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন, এমনকি হুমকি ও সহিংসতার মধ্যেও নিরাপত্তা বাহিনী ও পুরুষ আন্দোলনকারীদের মাঝে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। যখন পুরুষ সহযোদ্ধারা গ্রেফতার হন, তখন এই মেয়েরা নতুন কৌশল অবলম্বন করে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন এবং আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। এমনকি ইন্টারনেট বন্ধ থাকার সময়েও তারা সেন্সরশিপের বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম হন। অনিশ্চয়তার মাঝেও তাদের এই সাহস ও নিঃস্বার্থ ভূমিকা ছিল প্রকৃত বীরত্বের প্রতিচ্ছবি।
এজন্য আন্তর্জাতিক নারী সাহসিকতা পুরস্কারের অংশ হিসেবে ‘ম্যাডেলিন অ্যালব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ড’ পাচ্ছেন বাংলাদেশের জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া নারীরা। আগামী ১ এপ্রিল পুরস্কার দেওয়া অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প।
২০০৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ৯০টিরও বেশি দেশের ২০০ জনেরও বেশি নারীকে পুরস্কার দিয়ে স্বীকৃতি দিয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত