দেশের বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সরকারের কাছে বিদ্যুৎ বিলের বকেয়া বাবদ পায় ৫ হাজার কোটি টাকা। ১৮০ দিনের বিল পরিশোধ করেনি সরকার। কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচ মাসের বিল পরিশোধ করা হয়নি। ৯ নভেম্বর বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকদের সঙ্গে সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে গত সপ্তাহের শেষে পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিশোধ করা হয়নি। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকরা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এরই মধ্যে অনেক বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিক সরকারি চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ দিচ্ছেন। বকেয়া বিল না পেলে তাদের অনেকেই জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবেন না।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা শিগগিরই বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর পাওনা মেটাতে শুরু করব। তবে পুরো অর্থ একেবারে দেওয়া সম্ভব না। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো যাতে এলসি খুলে জ্বালানি তেল আমদানি অব্যাহত রাখতে পারে- বিষয়টি মাথায় রেখে যতটা পরিশোধ করা সম্ভব, সে চেষ্টাই করা হবে। দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ সরবরাহ দিচ্ছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)-কে। বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের বিপুল অর্থ বকেয়া পড়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঋণ পরিশোধ, কেন্দ্র মেরামত, জ্বালানি বিল পরিশোধসহ এলসি খোলায় জটিলতা বাড়ছে। শিগগিরই বকেয়া না পেলে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন মালিকরা। সরকার যে পরিমাণ বিদ্যুৎ চাচ্ছে, তার অর্ধেক দিচ্ছে অনেক বেসরকারি কেন্দ্র। আপাতত কম বিদ্যুৎ দিয়ে এসব কেন্দ্র পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। বকেয়া থাকায় অনেকেই এলসি খুলতে পারবেন না। অবস্থা কতটা খারাপের দিকে যেতে পারে, তা সরকারের বকেয়া পরিশোধের পরিমাণের ওপর নির্ভর করবে। এর ওপর নির্ভর করবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকরা কতটা তেল আমদানি করতে পারবেন। বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসর অ্যাসোসিয়েশন (বিপ্পা)-এর সভাপতি ডেভিড হাসনাত বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকার এর আগে ৭০ দিনের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ করেছিল। গত সপ্তাহের বৈঠকে বিদ্যুৎ উপদেষ্টাকে আমরা জানিয়েছি- এর আগে আপনারা তো ৯০ দিনের কম সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করেছিলেন। এখন ১৮০ দিনের ওপর চলে গেছে। আমরা এলসি খুলতে পারছি না। জ্বালানি আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন- তারা বকেয়া পরিশোধের চেষ্টা করছেন। কিন্তু তিন মাসের জায়গায় এক মাসের দেওয়া হলে সমস্যার সমাধান হবে না। আমরা ৯০ দিনের বকেয়া থাকলে উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারি। এর বেশি হলে কঠিন হয়ে যায়।