বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ৫-২৯ বছর বয়সী শিশু ও তরুণদের সড়ক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করছে বিআরটিএ।
রবিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ‘ওয়ার্ল্ড ডে অব রিমেমবরস ফর রোড ট্রাফিক ভিক্টিমস’ উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, তরুণ জনগোষ্ঠীকে সড়ক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা না করা গেলে ২০৪০ সালের পর দেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে। সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে যানবাহনের ফিটনেস অটোমেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। পাশাপাশি দক্ষ চালক তৈরিতে ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে— এ প্রশিক্ষণ ছাড়া কোনও চালককে লাইসেন্স দেওয়া হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দীন আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেন, রোডক্র্যাশ ও এক্সিডেন্টের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট করা গুরুত্বপূর্ণ। রোডক্র্যাশ প্রতিরোধযোগ্য, কিন্তু এক্সিডেন্ট নয়— তাই সড়কে সবার নিরাপত্তার জন্য আলাদা ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ জরুরি। কারণ বিদ্যমান সড়ক পরিবহন আইন মূলত পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করলেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না।
রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনায় জানানো হয়, বিশ্বব্যাপী ৫-২৯ বছর বয়সী শিশু ও তরুণদের মৃত্যুর প্রধান কারণ রোডক্র্যাশ, যার ৯২ শতাংশ ঘটে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে— উন্নত দেশের তুলনায় যা তিন গুণ বেশি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, পুলিশ এবং বিআরটিএর তথ্যেও দেখা গেছে, প্রতি বছর রোডক্র্যাশ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
মূলপ্রবন্ধে আরও বলা হয়, বিশ্বের অনেক দেশ সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ বাস্তবায়ন করে ২০৩০ সালের মধ্যে সড়কে মৃত্যু ও আহতের সংখ্যা কমাতে সক্ষম হয়েছে। এ বছর মরক্কোতে অনুষ্ঠিত ‘চতুর্থ গ্লোবাল মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স অন রোড সেফটি’-তে বাংলাদেশ জানায়—২০২৭ সালের মধ্যে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা আইন অনুমোদন, ২০২৬ সালের মধ্যে মোটরসাইকেল হেলমেট স্ট্যান্ডার্ড বাস্তবায়ন গাইডলাইন, স্থানীয় পর্যায়ে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ ম্যানুয়াল এবং একটি সেন্ট্রাল রোডক্র্যাশ ডেটা সিস্টেম চালু করবে।
সভায় রোড সেফটি কোয়ালিশনের সদস্য প্রতিষ্ঠান ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, ব্র্যাক, সিআইপিআরবি, স্টেপস, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও বিএনএনআরসি ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।