পাকিস্তানে সংবিধান সংশোধনের প্রতিবাদে পদত্যাগ করলেন আরও এক বিচারপতি। এবার লাহোর হাইকোর্টের বিচারপতি শামস মেহমুদ মির্জা পদত্যাগ করলেন। এর আগে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সংশোধনীর সমালোচনা করে পদত্যাগ করেন। সংবিধান সংশোধনকে কেন্দ্র করে ক্রমেই বিচারবিভাগীয় ‘সঙ্কটের’ দিকে ধাবিত হচ্ছে পাকিস্তান।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে দেশটির সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ক্ষমতা আরও বাড়ানো হয়েছে। তার জন্য বিশেষ আইনি রক্ষাকবচের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী, পাকিস্তান সেনা সর্বাধিনায়কের বিরুদ্ধে কোনও মামলা করা যাবে না আদালতে। এর পাশাপাশি খর্ব করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতাও। সংশোধনী অনুসারে, সংবিধান সংক্রান্ত যাবতীয় মামলার ভার সুপ্রিম কোর্টের হাত থেকে কেড়ে নতুন সাংবিধানিক আদালতে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এর ফলে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আরও দুর্বল হবে। শক্তিশালী হবে সেনাবাহিনী।
এই সংশোধনীতে ইতোমমধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি। এর পরপরই গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টে পদত্যাগ করেন বিচারপতি সৈয়দ মনসুর আলি শাহ এবং বিচারপতি আথার মিনাল্লাহ। তাদের বক্তব্য, এই সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারব্যবস্থা এবং সংবিধানের অপমান করা হয়েছে। এরপর শনিবার পদত্যাগ করলেন লাহোর হাইকোর্টের বিচারপতি শামস মেহমুদ মির্জাও। এর মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনীর প্রতিবাদ পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট থেকে ছড়াল হাইকোর্টেও।
আদালতের ক্ষমতা খর্বের অভিযোগের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ক্ষমতাও বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানে। গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সরকার ‘চিফ অব আর্মি স্টাফ’ (স্থলসেনা প্রধান) ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ (সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান বা সেনা সর্বাধিনায়ক) পদে উন্নীত করার জন্য পাকিস্তানের সংবিধানের ২৪৩ নম্বর ধারা সংশোধনের বিল পাস করে। সংবিধানে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার (স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনী) প্রধানের মাথার উপর কোনও পদের অস্তিত্ব এতদিন ছিল না। মুনিরের জন্য বিশেষ ভাবে পদটি তৈরি করা হয়েছে। সূত্র: ডন নিউজ
বিডি প্রতিদিন/একেএ