আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে গুলির নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। বলেছেন, পুলিশের ওপর কেউ হামলা করতে এলে আত্মরক্ষার জন্যই পুলিশ এই পদক্ষেপ নেবে। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বেতার বার্তায় ডিএমপির সদস্যদের এ বার্তা দেন নগর পুলিশের এই অধিকর্তা। পরবর্তীতে বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছেও বিষয়টি স্বীকার করেছেন ডিএমপি প্রধান শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
তিনি বলেন, নগরবাসীর জানমাল এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করছেন ডিএমপির প্রতিটি সদস্য। আগুন সন্ত্রাসীরা যদি পুলিশের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও অ্যাকশনে যেতে ডিএমপির সদস্যদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, আমি ওয়্যারলেসে বলেছি কেউ বাসে আগুন দিলে, ককটেল মেরে জীবনহানির চেষ্টা করলে তাকে গুলি করতে। এটা আমাদের আইনেই বলা আছে।
গত ১১ নভেম্বর দুপুরে চট্টগ্রামে কয়েকটি ‘টার্গেট কিলিংয়ের’ পর চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেন। ওই দিন দুপুরে বেতার বার্তায় এ নির্দেশনা দেওয়ার পরই বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিচারের রায়ের তারিখ ঘোষণার দিন ধার্য করে গত ১৩ নভেম্বর। এর প্রতিবাদে ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি দেয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা থাকা আওয়ামী লীগ। ওই তারিখ কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাসে-ট্রেনে আগুন দেওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায় নাশকতাকারীরা। গত ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল ঘোষণা দেন আসামি শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ ১৭ নভেম্বর। এরপর আওয়ামী লীগ অনলাইনে ১৬ নভেম্বর রবিবার থেকে টানা দুই দিন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করে। শনিবার রাত থেকেই ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল পুলিশের একাধিক উপকমিশনারের কাছে জানতে চাইলে তাদের প্রায় সবার বক্তব্য ছিল অভিন্ন। তারা বলছিলেন, দণ্ডবিধির ৯৬ থেকে ১০৬ ধারায় আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকারের বিষয়টি বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। দণ্ডবিধির ৯৬ ধারায় বলা হয়েছে, ‘ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার অধিকার প্রয়োগকালে কৃত কোন কিছুই অপরাধ নহে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের অপরাধ বিভাগের একজন উপকমিশনার বলেন, ‘এমন নির্দেশনা কিন্তু কমিশনার স্যার আগেও দিয়েছেন। তারপরও ডিএমপির সদস্যদের মাঝে চাঙাভাব আসেনি। জুলাই-আগস্টের আতঙ্ক থেকে এখনো বেরিয়ে আসতে পারেননি পুলিশ সদস্যরা।’