ভারী বর্ষণে গতকাল তলিয়ে যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল। বিমানবন্দরসংলগ্ন বিভিন্ন সড়কেও জমে হাঁটু পানি। এতে টার্মিনালে যানবাহন ঢুকতে না পারায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। একই সঙ্গে ভারী বর্ষণে মিরপুর, কালশী, মগবাজার, গুলশানসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়।
জানা গেছে, গতকাল বেলা ১১টার দিকে টানা ৩০ মিনিট বৃষ্টি হয়। এ কারণে বিমানের বলাকা ভবনের পেছন দিয়ে অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে ঢোকার সড়কে পানি জমে যায়। এরপর থেমে থেমে আরও কয়েক দফায় বৃষ্টি হলে ওই সড়কে কোমরসম পানি জমে যায়। এর মধ্যে কয়েকটি যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে সড়কে বন্ধ হয়ে যায়। টার্মিনালে ঢুকতে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে দেখা গেছে যাত্রীদের। বিমানবন্দরে আসা একজন যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘এখানে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। কর্তৃপক্ষ টেকসই কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এমন অব্যবস্থাপনা দেশের জন্য লজ্জার ব্যাপার।’ ভারী বর্ষণে শুধু বিমানবন্দরে নয়; কালশী রোড, মুসলিম বাজার ঢাল, মিরপুর ডি ব্লক সিরামিক রোড, ১ নম্বর ধান খেত মোড়, কমার্স কলেজ শিয়ালবাড়ী মোড় ও মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর এলাকায়ও হাঁটু সমান পানি জমে যায়। এতে জনসাধারণ চলাচলে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েন। কালশী রোডের বাসিন্দা ফয়সাল আহমেদ তমাল বলেন, ‘বেলা ১১টায় আমার অফিসে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে বাসায় আটকা পড়ি। শেষ পর্যন্ত জামা-কাপড় ব্যাগে নিয়ে হাফপ্যান্ট ও টি-শার্ট পরে বের হতে হয়েছে। এখন তো বর্ষাকালও নয়, তবুও জলাবদ্ধতা হচ্ছে।’ মিরপুর ১২ নম্বর সিরামিক এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, ‘মিরপুরের বেশ কিছু স্থানে সামান্য মুষল ধারে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। কালশী রোড, মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর, শিয়ালবাড়ি মোড় ও সিরামিক এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’ কর্তৃপক্ষ জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান দিতে না পারায় আক্ষেপও প্রকাশ করেন তিনি। জলজটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন গুলশান, মগবাজার, মধুবাগ, কাকরাইলসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের বাসিন্দারাও।
এদিকে, শাহজালাল বিমানবন্দরে জলাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, শাহজালাল বিমানবন্দরের সামনে জলাশয় ছিল। সেটা উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে ভরাট হয়ে গেছে। একই সঙ্গে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিলারের কারণে পানি সরছে না। তবে আমরা পানি সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। এই পানি সরতে একটু দেরি হবে। গতকাল ডিএনসিসিসি নগর ভবনে ঢাকার জলাবদ্ধতা নিয়ে ডিএনসিসির উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।