বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি বহুরূপী ঈগল। এরা নিজের রং বদলায়, তাই এই নামকরণ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এদের পরিচিতি শাবাজ সাদাল নামে। অ্যাক্সিপিট্রিডি গোত্রের এই পাখি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। গত ১৪ আগস্ট কমলগঞ্জের কুরমা চা বাগান থেকে এই ঈগল পাখিটি উদ্ধার করেছে শ্রীমঙ্গলের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও উদ্ধারে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এনডেঞ্জার্ড ওয়াইল্ডলাইফ’র সদস্যরা। পাখিটি বর্তমানে জনকিছড়া বিটে বন্যপ্রাণী রেসকিউ সেন্টারে বন বিভাগের পরিচর্যায় আছে।
বহুরূপী ঈগলের দৈর্ঘ্য ৫১ থেকে ৮২ সেন্টিমিটার। এরা বছরে ৪ থেকে ৫ বার পালকের রং বদলায়। তবে দেহের রঙে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হালকা ও গাঢ়; এ দুটি পর্বের প্রাধান্য দেখা যায়। গাঢ় পর্বে ঘন কালো, ফিকে পর্বে হালকা বাদামি এবং দুই পর্বের মাঝে কালচে বাদামি। এ ছাড়া হালকা পর্বের পাখির পিঠের রং বাদামি। বুক-পেট সাদাটে ও তাতে লম্বা লম্বা দাগ থাকে। আর গাঢ় পর্বে একনজরে দেখলে পাখিটিকে কালচে দেখায়, কিন্তু অসল রং ঘন কালচে-বাদামি। চোখ ফিকে খাকি থেকে উজ্জ্বল কমলা হলুদ। লেবু-হলুদ রঙের পা দুটো বেশ লম্বা। দেহ লম্বাটে। স্ত্রী ও পুরুষের চেহারা একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ বাদামি, মাথা সাদাটে এবং লেজে অগণিত সরু ডোরা। এরা উন্মুক্ত বনভূমি, বনের কাছাকাছি আবাদি জমি ও বিল-জলাধারের আশপাশে একাকী বা জোড়ায় বিচরণ করে। খাদ্যতালিকায় রয়েছে ইঁদুর, তক্ষক, ব্যাঙ, ছোট সাপ, মাছ ইত্যাদি।