সমুদ্রগামী জাহাজশিল্পকে উৎসাহ প্রদান, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাঁচ হাজার ডিডব্লিউটির (ডেডওয়েট টনেজ বা মেট্রিক টনে জাহাজটি পণ্য পরিবহন ক্ষমতা) অধিক পরিবহন ক্ষমতার জাহাজ আমদানিতে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, যে সব সমুদ্রগামী জাহাজের ন্যূনতম বহন ক্ষমতা পাঁচ হাজার ডিডব্লিউটির বেশি, সেগুলো আমদানির ক্ষেত্রে আরোপনীয় সমুদয় মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এসব জাহাজ আমদানি পর্যায়ে আরোপিত ৭.৫ শতাংশ মূসক অব্যাহতি পাবে। এতে সরকারি-বেসরকারি খাতে আরও বেশি সমুদ্রগামী জাহাজ কেনা হবে, যা বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে সহায়তা করবে বলে মনে করছে উপদেষ্টা পরিষদ। তিনি বলেন, বৈঠকে ১০টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন নিয়েও পর্যালোচনা হয়। সেখানে বলা হয় ৫১টি সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়েছে। অন্যগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সরকার আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ওই সব সংস্কারের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিষয় জড়িত। তবে এ সরকার যাওয়ার আগে বাস্তবায়নযোগ্য বেশির ভাগ সংস্কার বাস্তবায়ন করে যাবে। তিনি বলেন, শ্রম উপদেষ্টা জানিয়েছেন, শ্রম আইন সংশোধনের কাজ চলছে। শ্রম সংস্কার কমিশন যে ৮২টি সুপারিশ করেছে, শ্রম আইন সংশোধন হলে অধিকাংশ সুপারিশ এমনিতেই বাস্তবায়ন হয়ে যাবে। পুলিশ সংস্কার নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। পুলিশ যাতে প্রভাবমুক্ত থেকে স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারে, এজন্য দ্রুত আইন করতে আইন মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশের অভ্যন্তরীণ অভিযোগগুলো দেখার জন্য একটা কমিশন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, দেশের কিছু কিছু মেডিকেল কলেজের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। শিক্ষক সংকট আছে। মেডিকেল শিক্ষার মান বাড়াতে অবসরে যাওয়া অভিজ্ঞদের সম্পৃক্ত করার বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলাপ হয়েছে। শিগগিরই এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আসবে। এ ছাড়া স্থানীয় সরকারকে বিকেন্দ্রীকরণে প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন। তাদের ক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলেছেন। স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা যাতে নিজস্ব তহবিলের ব্যবস্থা ও ব্যবস্থাপনা করতে পারেন- সে বিষয়ে আইন করা যায় কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। বাংলাদেশ ফুটবল দলকে আনতে বিমানবাহিনীর একটা এয়ারক্রাফট নেপালে গেছে।