‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ বাতিল করা না হলে ঈদুল আজহার পর কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কর্মচারীরা। এজন্য তাঁরা সচিবালয় ছাড়াও সারা দেশের সরকারি কর্মচারীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। সচিবালয়ের বাদামতলায় গতকাল বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর এ হুঁশিয়ারি দেন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দুই উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন কর্মচারীরা।
সমাবেশে বাদিউল কবীর বলেন, ‘আমরা আনুগত্য, নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলায় বিশ্বাসী। আমাদের আনুগত্যের বাইরে ঠেলে দেওয়ার যে অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে, তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ সচিবালয় নয়, সারা দেশের সব দপ্তর, সংস্থা ও পরিষেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মচারীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। নিবর্তনমূলক এ কালো আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত প্রত্যেক কর্মচারী মাঠে থাকবেন। ১৮ লাখ সরকারি কর্মচারী আত্মীয় মিলে ২ কোটি মানুষের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সরকারকে এ ২ কোটি মানুষের মুখোমুখি করা হয়েছে এ কালো আইন প্রবর্তন করে। বিভিন্ন জায়গায় অস্থিরতা চলছে। অথচ তা প্রশমনের উদ্যোগ নেই।’ প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বাদিউল কবীর বলেন, ‘আপনি একজন গুণী মানুষ। আপনি নিরপরাধ, আনুগত্যপরায়ণ কর্মচারীদের মনের কথাটা উপলব্ধি করবেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে এ কালো আইন সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের আদেশ জারি করবেন এবং যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।’ তিনি বলেন, ‘কর্মচারীদের শান্তি ও শৃঙ্খলাপূর্ণ এবং ভদ্রোচিত আচরণ যদি দুর্বলতা মনে করেন, তাহলে তা আপনাদের জন্য বুমেরাং হবে। দেশটা মুসলিমপ্রধান, সামনে কোরবানি ও বাজেট। তাই আমরা কঠোর কর্মসূচি দিইনি।’ সমাবেশের পর আন্দোলনকারী কর্মচারীরা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের দপ্তরে স্মারকলিপি জমা দেন। এ সময় দুই উপদেষ্টা দপ্তরে ছিলেন না। এর আগে রবিবার তিন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, চার ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে, এমন বিধান রেখে ২৫ মে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়েছে। ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদনের পর ২৪ মে থেকেই আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব সংগঠন আন্দোলন করে আসছে।