তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। তাপপ্রবাহের কারণে বিভিন্ন স্থানে রাস্তার পিচ গলে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মানুষের পাশাপাশি প্রাণিকুলেরও হাঁসফাঁস অবস্থা।
গতকাল চুয়াডাঙ্গায় চলতি বছরের সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকায়ও বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছেন, গতকাল রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২৮ মার্চ রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগে তাপপ্রবাহ চলছে। এ অবস্থা আরও অন্তত দুই দিন চলতে পারে। বৃহস্পতিবারের চেয়ে গতকাল তাপপ্রবাহ দেশের আরও বেশি এলাকায় ছড়িয়েছে। দেশজুড়ে বয়ে চলা তাপপ্রবাহের মধ্যে তিন দিনের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, বরিশাল, পটুয়াখালীসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়ার আভাস এসেছে আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে।
গতকাল সকাল থেকেই তীব্র রোদ আর গরমের কারণে মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা ছিল কম। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে কম বের হয়েছেন। খেটে খাওয়া মানুষকে গরমের ভোগান্তি আর দুর্ভোগ বেশি পোহাতে হয়েছে। মে’র প্রথম সপ্তাহেও তাপমাত্রা মোটামুটি সহনীয় ছিল। কিন্তু বুধবার তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, বৃষ্টি কমে গেলে তাপমাত্রা বাড়ে। এপ্রিলে গরম অপেক্ষাকৃত কম ছিল, কারণ পশ্চিমা লঘুচাপ সক্রিয় থাকায় ওই মাসে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাব আপাতত নেই। দুই থেকে তিন দিন পর পশ্চিমা বায়ু আবার সক্রিয় হবে। সেই প্রভাবে বৃষ্টি বাড়তে পারে।
অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে আজ থেকে দেশের কিছু কিছু অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের আভাস রয়েছে। ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গাসহ রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এতে তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসতে পারে। তথ্যমতে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মাঝারি। ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৪২-এর বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে গণ্য হয়।