আজিজুর রহমান। চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক এবং চিত্রকর। ২০২৫ সালে মরণোত্তর ‘একুশে পদক’-এ ভূষিত হয়েছেন তিনি। প্রচণ্ড স্মৃতিধর আজিজুর রহমান কোনো পুস্তক বা উইকিপিডিয়া ছাড়াই নিখুঁতভাবে বলে যেতে পারতেন পুরোনো দিনের ইতিহাস। সান্তাহারের আহসানুল্লাহ ইনস্টিটিউট থেকে এসএসসি পাস ও ঢাকা সিটি নাইট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন আজিজুর রহমান। এরপর চারুকলা আর্ট ইনস্টিটিউটে কমার্শিয়াল আর্টে ডিপ্লোমা করেন। অংকন শিল্পী ছিলেন। করোনাকালীন অবসরে জলরং ব্যবহার করে প্রচুর ছবি একেঁছেন। জীবদ্দশায় আজিজুর রহমানের ইচ্ছা ছিল নিজের একক একটি প্রদর্শনী করবেন। সে ইচ্ছায় জীবনের শেষ দিনগুলোতে কানাডায় মেয়ে বিন্দির কাছে থাকার সময়ে প্রচুর ছবি এঁকেছেন। কর্মজীবনের শুরুতে এভারগ্রিন পাবলিসিটিতে চলচ্চিত্রের ব্যানার তৈরি করতেন। সেই সূত্রেই ১৯৫৮ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়া, পরিচালক এহতেশামের সহকারী হন ‘এ দেশ তোমার আমার’ ছবিতে। ১৯৬৭ সালে ড. আশরাফ সিদ্দিকীর ময়মনসিংহের লোকগল্প অবলম্বনে নিজেই পরিচালনা করেন ‘সয়ফুলমুলক বদিউজ্জামাল’। এ ছবিটির সাফল্য এতটাই যে, তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানে এটি পুনর্নির্মিত হয় ‘মেরে আরমান মেরে স্বপ্নে’ নামে। এরপর আজিজুর রহমান হয়ে ওঠেন এ দেশের অন্যতম ব্যস্ত পরিচালক। তার শিশুতোষ ছবি ‘অশিক্ষিত’, ‘ছুটির ঘণ্টা’ দেশে ও বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। আজিজুর রহমান ৫৪টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘অশিক্ষিত’, ‘মাটির ঘর’, ‘জনতা এক্সপ্রেস’, ‘সাম্পানওয়ালা’, ‘ডাক্তার বাড়ি’, ‘গরমিল’ ও ‘সমাধান’, ফুলেশ্বরী, মায়ের আঁচল, স্বীকৃতি, দিল, লাভ, অপরাধ, অগ্নিশিখা, ঘরে ঘরে যুদ্ধ প্রভৃতি। তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য তিনটি ছবি অশিক্ষিত, ছুটির ঘণ্টা মস্কোতে, জনতা এক্সপ্রেস তাসখন্দে এবং ছুটির ঘণ্টা রুমানিয়াতে প্রদর্শিত হয়। বাংলা ছবির পরিচালনার পাশাপাশি চিত্র পরিচালক আজিজুর রহমান মেরে আরমান মেরে স্বপ্নে, সাত সেহেলী, বস্তির রানী, পরদেশে রেহেনে দো উর্দু ছবিগুলো পরিচালনা করেন। এ ছাড়া তিনি ভারতে বেশ কিছু বাংলা ছায়াছবি পরিচালনা করেছেন। তার আত্মীয় চিত্র পরিচালক মতিন রহমান বলেন, ‘এমন নির্মাতা আর হবে না আমাদের দেশে। তার সিনেমার ভাষা, লাইট, দৃশ্যায়ন সবই অদ্ভুত রকমের শৈল্পিক। তার প্রতিটি কাজ আমাদের এখানকার নির্মাতাদের জন্য শিক্ষা সফরের মতো। তার প্রতিটি চলচ্চিত্র দর্শকদের বিমোহিত করেছে। আজিজুর রহমানের নির্মিত প্রতিটি সিনেমা ছিল বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। তাই তার নির্মিত প্রতিটি সিনেমা দেখে দর্শকরা যেমন আনন্দিত হয়েছেন, তেমনি ভেসেছেন চোখের জলে। গুণী এই চলচ্চিত্র নির্মাতা একই সঙ্গে সাফল্য পেয়েছেন চলচ্চিত্র প্রযোজনায়ও।’ মতিন রহমান বলেন, ‘আমি স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াই। আজিজুর রহমানের দুটি সিনেমা সেখানে পাঠ্য। একটি হলো- ‘ছুটির ঘণ্টা’ অন্যটি ‘জনতা এক্সপ্রেস’। মানেগুণে এ দুটি সিনেমা আমাদের ইন্ডাস্ট্রির অনেক বড় অর্জন। শত ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি আমাদের চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের আলোচনা বা অনুষ্ঠানে সময় দিতেন। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৯ সালের ১০ অক্টোবর বগুড়ার সান্তাহারে। সদা হাসিমুখের এই মানুষটি ২০২২ সালের ১৪ মার্চ প্রয়াত হন। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা। মেয়ে আলিয়া রহমান বিন্দি বলেন, ‘আমার বাবা একজন প্রকৃত মানুষ ছিলেন। যিনি অনেক পরিশ্রম করে এই পর্যায়ে পৌঁছেছেন। খুবই সহজ-সরল এবং নিরহংকার জীবনযাপন করতেন। বাবা ছিলেন কাজপাগল একজন মানুষ। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তাকে দেখেছি কাজের মাঝে ডুবে থাকতে। বাবা কখনো টাকার জন্য কাজ করতেন না। উনি বলতেন, ‘আমি টাকার পেছনে ছুটব না, এত ভালো কাজ করব, টাকা আমার পেছনে ছুটবে।’
শিরোনাম
- একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (১০ মে)
- পাকিস্তানের ড্রোন হামলায় ভারতের পাঞ্জাবে আহত ৩
- ভাঙ্গায় জাহানাবাদ এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত
- বাংলাদেশের চারটি টিভির ইউটিউব চ্যানেল বন্ধ করল ভারত
- নোয়াখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মা ও শিশু নিহত, আহত ২
- জেল থেকে পালানো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
- দোসরদের দেশ ত্যাগের সুযোগ দিচ্ছে সরকার
- কুতুবদিয়ায় মাছ ধরার সময় আটক দুই নৌকা, মুচলেকায় মুক্ত
- চাঁবিপ্রবিতে জিএসটি 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
- নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
- দ্রুত সিদ্ধান্ত না আসলে সারা দেশ থেকে ঢাকা মার্চ : নাহিদ
- ‘সর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে সে ভূত তাড়াবে কে’
- শেওড়াপাড়ায় বাসা থেকে দুই বোনের মরদেহ উদ্ধার
- সরকারের বরাদ্দের চাল এখনও পাননি কুতুবদিয়ার নিবন্ধিত জেলেরা
- আওয়ামী লীগের দুই নেতা গ্রেপ্তার
- নোয়াখালীতে জমিসংক্রান্ত বিরোধে হামলায় আহত আট, আটক ১০
- মৌলভীবাজারে পুশইন হওয়া ১৫ বাংলাদেশিকে থানায় হস্তান্তর
- ‘শেখ মুজিবের করা কালো আইনের ১৯ ধারায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হতে পারে’
- পারভেজ হত্যা মামলায় গ্রেফতার ফারিয়া রিমান্ডে
- কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী: দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়, বর্ণিল আয়োজন