ফেনীর স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। চায়না-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল, সেনা বিগ্রেড, বল্লামুখা বাঁধ, মুছাপুর ক্লোজার ও লালপোল আন্ডারপাস নির্মাণসহ বেশ কিছু স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার বিকেলে ফেনী পৌরসভা মিলনায়তনে 'ঐক্যবদ্ধ নাগরিক ফোরাম ফেনী'র ব্যানারে আয়োজিত নাগরিক সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও ফেনী পৌরসভার প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এয়াকুব নবীর সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনী'র সভাপতি সিদ্দিক আল মামুনের সঞ্চালনায় নাগরিক সংলাপে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম, জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( শিশু ও আইসিটি) ফাতিমা আক্তার, বাংলাদেশ সড়ক বিভাগ ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক, আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবদুর রহীম, সোনাগাজী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানিয়া আক্তার লুবনা, জেলা হেফাজত ইসলামের সেক্রেটারি মাওলানা ওমর ফারুক, ডা. রাশেদুল হাসান, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সদর উপজেলা উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শিহাব আহমেদ, জেলা ট্রাফিক পুলিশের টিআই এস এম শওকত হোসেন, ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের সেক্রেটারি মাওলানা একরামুল হক ভূঁইয়া, কানাডা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম হুমায়ুন পাটোয়ারী, এবি পার্টির চট্টগ্রাম বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী শাহ আলম বাদল, আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা মোহাম্মদ আলী, জেলা খেলাফত মজলিসের সহ-সেক্রেটারি আজিজ উল্লাহ আহমদী, ছাত্র প্রতিনিধি মুহাইমিন তাজিম ও জেলা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি জিয়া উদ্দিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন বলেন, ফেনীর মানুষ ভুলে গিয়েছিল নাগরিক সংলাপের মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা যায়। ফেনীর জন্য অন্যতম সুযোগ আছে এই জেলায় প্রচুর পরিমাণে প্রবাসী আছে। ভালো কিছু অর্জনের জন্য আমাদের মধ্যে যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে এটাই আমাদের অর্জন।
জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছি। কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়ে আমাদেরকে জানালে পুলিশ ৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছাবে। পৌরবাসী বাসা ভাড়া দেওয়ার সময় অবশ্যই ভাড়াটিয়ার বিষয়ে সকল খোঁজখবর নিয়ে বাসা ভাড়া দেবেন। এ বিষয়ে আপনারা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলে প্রশাসন অবশ্যই আপনাদের সহযোগিতা করবে।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এয়াকুব নবী বলেন, আমরা ফেনীবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেকোনো দাবি আদায় করে নিয়ে আসতে হবে। বিগত ১৫ বছর ফেনী বেগম খালেদা জিয়ার এলাকা হওয়ার কারণে এজেলায় দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। গত আগস্টের বন্যার মতো হাজারো বছরের ইতিহাসে ফেনীতে এরকম ভয়াবহ বন্যায় আর হয়নি। ভারতের সাথে আমাদের বৈরী সম্পর্ক। এর অন্যতম কারণ ভারত সম্পর্কিত সরকার বাংলাদেশ নেই।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক বলেন, আমাদের স্বপ্ন সীমাহীন। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ফেনীর সমস্যা নিয়ে আমাদেরকে কাজ করতে হবে।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী বলেন, আগামী ফেনী বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। ফেনীকে পাশ্চাত্যের লেবানন ও সন্ত্রাসের জনপদ বলা হতো। এইসব তকমা থেকে বের হয়ে ফেনীর উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে।
জেলা হেফাজত ইসলামের সেক্রেটারি মাওলানা ওমর ফারুক বলেন, দলীয়ভাবে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে ফেনীর স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের ঐক্য সুদৃঢ় হবে।
জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি আব্দুর রহিম বলেন, ফেনীর স্বার্থে আমাদের একসূত্রে কাজ করতে হবে। দল-মত নির্বিশেষে ১৮ লাখ মানুষের সাথে জন্য এক হতে হবে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জেলা ইসলামী আন্দোলনের সেক্রেটারী মাওলানা একরামুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমাদের অনৈক্য ও নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি কারণে আওয়ামী লীগ ফেনীতে ঝটিকা মিছিল করার মতো সাহস করে।
জেলা খেলাফত মজলিসের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজ উল্লাহ আহমদী বলেন, ফেনীর উন্নয়নের জন্য একটি প্লাট্যফর্ম খুবই জরুরি ছিল। যেখানে সকল দল একসাথে নিজেদের কথা বলতে পারবে। সমসাময়িক স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে আমাদের জোর ভূমিকা রাখা উচিত।
সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনী'র সভাপতি সিদ্দিক আল মামুন বলেন, কারো লাভের আশায় যাতে আর বাঁধ না ভাঙে। টেকসই বাঁধ নির্মাণ সময়ের দাবি। ফেনী সবদিক থেকে এগিয়ে গেলেও স্বাস্থ্য খাতে পিছিয়ে রয়েছে। তাই একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা অতিব জরুরি। এছাড়া চিকন্সে নেক ফেনীর সুরক্ষায় সেনা বিগ্রেড স্থাপনের উদ্যোগ নিতে হবে।
এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বক্তব্য রাখেন।
বিডি প্রতিদিন/কেএ