মার্চে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহার করার পর থেকে গাজাজুড়ে ইসরায়েল হাজার হাজার ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে। বিগত কয়েক সপ্তাহে পুরো শহর ও আশপাশের এলাকা ধ্বংস করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসি বলছে, গাজায় হাজার হাজার ভবন পরিকল্পিতভাবে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল। যেখানে আগে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করতেন। স্যাটেলাইট ছবিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র দেখা যাচ্ছে। এ ধ্বংসযজ্ঞের বড় একটি অংশ পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত করা হয়েছে। সেসব জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবন এবং অনেক ক্ষেত্রেই অক্ষত ভবন পর্যন্ত গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যাচাই করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, টাওয়ার ব্লক, স্কুল ও অন্যান্য স্থাপনার ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণে ধুলো ও ধ্বংসাবশেষের বিশাল মেঘ ছড়িয়ে পড়ছে।
বিবিসি ভেরিফাইকে একাধিক আইন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ইসরায়েল সম্ভবত জেনেভা কনভেনশনের অধীনে যুদ্ধাপরাধ করেছে। কারণ, দখলদার শক্তির মাধ্যমে অবকাঠামো ধ্বংস করাকে সেখানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেসের (আইডিএফ) এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কাজ করছেন। তিনি বলেছেন, হামাস বেসামরিক এলাকায় ‘সামরিক সরঞ্জাম’ লুকিয়ে রেখেছে এবং শুধু সামরিক প্রয়োজনেই সম্পদ ধ্বংস করা হয়।
জুলাই মাসে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ রাফাহ শহরের ধ্বংসাবশেষের ওপর একটি তথাকথিত ‘মানবিক শহর’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন, যেখানে প্রাথমিকভাবে ৬ লাখ ফিলিস্তিনিকে আবদ্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। সে পরিকল্পনাটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট বিবিসিকে বলেছেন, এই প্রস্তাব একটি বন্দিশিবির হিসেবে ব্যাখ্যা করা হতে পারে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, এই এলাকাটি আগেই ইসরায়েলি বোমা ও গোলাবর্ষণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তবে তখনো ডজনখানেক ভবন ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল।-বিবিসি
কিন্তু ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে ধ্বংসযজ্ঞ আরও বেড়ে যায়, যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষও সরিয়ে গোটা ব্লক মাটির সঙ্গে মিশিয়ে ফেলা হয়। হাতে গোনা কয়েকটি স্থাপনার একটি হিসেবে শুধু হাসপাতালটি রয়ে গেছে। এ ছাড়া পাশের সৌদি পাড়ায়ও এখন ধ্বংসের কাজ চলছে, যেখানে একসময় শহরের সবচেয়ে বড় মসজিদ ও বেশ কয়েকটি স্কুল ছিল। একটি যাচাই করা ভিডিওতে দেখা গেছে, রাফাহ শহরের এক রাস্তায় একটি ট্যাংক চলছে এবং পাশেই একটি ভেকু কাজ করছে।