শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিত করল ইরান। বুধবার দেশটির পার্লামেন্ট মজলিশে এ সংক্রান্ত যে বিলটি পাস হয়েছিল, গতকাল সেটি অনুমোদন করেছে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার আওতাধীন সংস্থা গার্ডিয়ান কাউন্সিল ইরান। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। গত ১৩ জুন রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর বোমা হামলা শুরুর পর থেকেই আইএইএ-এর প্রতি চরম অসন্তুষ্ট ছিল ইরান। কারণ তেহরানের বিশ্বাস, ইসরায়েলের এ হামলার ‘খসড়া’ তৈরি করে দিয়েছে আইএইএ।
১৯৭০ সালে আইএইএ-এর সঙ্গে এনপিটি চুক্তি করেছিল ইরান। সে সময় অবশ্য বর্তমান ইসলামপন্থি শাসকগোষ্ঠী শাসন ক্ষমতায় ছিল না। ইরানের সর্বশেষ রাজা বা শাহ রেজা পাহালভী তখন ইরানের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান ছিলেন। -আলজাজিরা
আইএইএ-এর সঙ্গে এএনপিটি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ইরান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, দেশটি কখনো পরমাণু অস্ত্র তৈরি বিষয়ক প্রকল্প গ্রহণ করবে না এবং আইএইএকে সহযোগিতা করবে। গত ৬ জুন আইএইএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ইরান যে মাত্রার বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, তা দিয়ে অনায়াসেই পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব। আইএইএ এই বিবৃতি দেওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় ১৩ জুন দিবাগত রাতে ইরানে বিমান অভিযান ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ শুরু করে ইসরায়েল। অভিযান শুরুর কিছুক্ষণ পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন, জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার বিবৃতিতে আমলে নিয়ে এ অভিযান শুরু হয়েছে। ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলা শুরুর পর গত ১৬ জুন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই এক ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, ইরানে ইসরায়েলি হামলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিয়েছে আইএইএ। ইরানের পার্লামেন্ট মজলিশের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কালিবাফ বলেছিলেন, এই আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে যত দিন আমরা পেশাদার আচরণের গ্যারান্টি না পাব, তত দিন সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত রাখা উচিত। তারপর বুধবার মজলিশে আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতসংক্রান্ত একটি বিল পাস হয়। গতকাল তার অনুমোদন দিল গার্ডিয়ান কাউন্সিল ইরান।