প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত প্রফেসর লুৎফে সিদ্দিকী বলেছেন, দেশের লোকজনকে দক্ষ না বানিয়ে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে জাপানে পাঠাচ্ছে আদম ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। এসব শ্রমিক বাইরে গিয়ে কম বেতনে কাজ করেন। এতে তারা নিজেদের খরচ চালাতে হিমশিম খান। ফলে তারা বাড়তি আয়ের জন্য অপরাধে জড়িয়ে পড়েন।
জাপানে উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থান সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। গতকাল বিডি জবস ও টপজে বাংলাদেশের সহযোগিতায় আগারগাঁও ন্যাশনাল আর্কাইভে অ্যাসোসিয়েশন অব জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউট ইন বাংলাদেশ (আজলিব) সেমিনারটির আয়োজন করে। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপান সেলের প্রধান শহীদুল ইসলাম চৌধুরী, পলিসি অ্যাডভাইজার জিয়া আহসান, বিডার হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নাহিয়ান রহমান রুচি, বিডি জবসের সিইও মাসুদ মাশরুর ও জুমে যুক্ত ছিলেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের জেলে কয়েদিদের মধ্যে ২৫ শতাংশ বাংলাদেশি। অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও অনিয়মের মাধ্যমে এজেন্সিগুলো অদক্ষ শ্রমিক জাপানে পাঠায়। তাদের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ বাংলাদেশ সরকার নিয়েছে কি না সে বিষয় জানতে চাইলে বিষয়গুলো সরকারের পক্ষ থেকে আইসোলেটেড করে রাখা হয়। ফলে দেশি এজেন্সিগুলো কালো তালিকাভুক্ত করে জাপান সরকার। অনলাইনে যুক্ত হয়ে দক্ষ শ্রমিকদের ব্যাপারে জোর দিয়ে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী বলেন, জাপানের জন্য আমাদের দক্ষ শ্রমিক তৈরি করতে হবে। যারা পরীক্ষা দিচ্ছে তারা যেন শতভাগ পাস করেন। তাহলে জাপানের কোম্পানিগুলো থেকে চাওয়া শ্রমিক কোটা খালি থাকবে না। তিনি আরও বলেন, জাপানের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেলে তারা আরও আগ্রহী হবে। জাপানের সঙ্গে কথা বলে আমরা শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি পরিশোধে সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করেছি। সরকার আগামী বছর ১০ হাজার শিক্ষার্থী নেওয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করবে। জাপানও শ্রমিক-শিক্ষার্থী নিতে আগ্রহী। জাপান সেলের পলিসি অ্যাডভাইজার জিয়া আহসান বলেন, জাপানে শ্রমিক প্রেরণে আগে কাজ হয়নি। বর্তমান সরকার জাপানে জনবল পাঠানোর জন্য মার্কেটিংয়ের কাজ করছে। ফলাফল হিসেবে নতুন করে ৪০ কোম্পানি শ্রমিক নিতে আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। আগামী বছর থেকে আমরা ১ লাখ শ্রমিক শিক্ষার্থী প্রেরণ করব। এতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হবে। বিডি জবসের সিইও মাসুদ মাশরুর বলেন, ব্যাংকগুলো দেশে উদ্যোক্তাদের লোন দিতে পারলে বিদেশগামীদের দিতে পারবে না কেন? তারাওতো এক প্রকার উদ্যোক্তা। দেশের অর্থনীতির চাকা সচলে তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স বড় ভূমিকা রাখে। আমরা প্রত্যাশা করি ব্যাংকগুলো প্রবাসীদের ৫-৭ লাখ টাকা ঋণ দেবে।