তিন দলের ওমেন্স চ্যালেঞ্জ কাপে অংশ নিচ্ছে নারীদের দুটি দল এবং ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৫ দল। নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশগ্রহণের আগে নিগার সুলতানাদের প্রস্তুতির জন্য এ চ্যালেঞ্জ কাপের আয়োজন। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ভারতের মতো দলগুলোর বিপক্ষে বিশ্বকাপে সাফল্য পেতে এমন একটি প্রস্তুতি সিরিজ কতটা সহায়ক হবে, প্রশ্ন উঠেছে। টি-২০ এশিয়া কাপের প্রস্তুতি হিসেবে লিটন বাহিনী যখন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে একটি সিরিজ খেলবে, সেখানে বিসিবি কেন পারেনি নারী দলের জন্য একটি বিদেশি দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি সিরিজ আয়োজন করতে। অথচ পুরুষ এবং নারী দুটি দলই বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্সের আওতাধীন। নারী ক্রিকেট সিরিজ কেন আয়োজন করতে পারেনি ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম অবশ্য এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। জানিয়েছেন, শেষ সময়ে বাছাইপর্ব টপকে বিশ্বকাপে জায়গা নেওয়ায় সময় পাওয়া যায়নি, ‘শেষ মুহূর্তে বাছাইপর্ব টপকে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলছে। সময় কম হওয়ায় আমরা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার জন্য কোনো আন্তর্জাতিক দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচের আয়োজন করতে পারিনি। পাকিস্তান আমাদের সঙ্গেই উঠেছে। তারা অনেক আগেই ঠিক করে রেখেছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ। সেজন্য আমাদের বিপক্ষে খেলছে না। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কথা হয়েছিল শুরুতে। পরবর্তীতে দলটি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেই বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করায় বাদ হয়ে যায়। বিশ্বকাপে সুযোগ না পাওয়ায় অনেক বেশি অর্থ খরচ করে খেলতে রাজি হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। থাইল্যান্ডের সঙ্গে টি-২০ ম্যাচ খেলা যায়, কিন্তু ওয়ানডে নয়। এসব কারণে আমরা বিদেশি কোনো দলের বিপক্ষে খেলার আয়োজন করতে পারিনি আমরা।’ ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান যেভাবেই ব্যাখ্যা দিন, বিদেশি দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার জন্য যে পরিকল্পনা জরুরি ছিল নিগারদের, সেখানে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
৩০ সেপ্টেম্বর শুরু নারী বিশ্বকাপ ক্রিকেট। গত আসরের মতো এবারও বিশ্বকাপে খেলবেন নিগাররা। আট দলের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে নিগার বাহিনী খেলবে ৭ ম্যাচ। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে গতকাল বিকেএসপিতে শুরু হয়েছে ওমেন্স চ্যালেঞ্জ কাপ। প্রথম ম্যাচে নিগার সুলতানার বাংলাদেশ লাল ৩২ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ সবুজকে। প্রথম ব্যাটিংয়ে ১৪৪ রান করে লাল দল। জবাবে সবুজ দল ১১২ রান করে। আগামীকাল লাল ও ছেলেদের ম্যাচ। এমনিতে ওমেন্স সিরিজে ছেলেদের দল রাখায় অনেকেই বিস্মিত। ছেলেদের দল যখন রেখেছেই, তখন অনূর্ধ্ব-১৭ কিংবা অনূর্ধ্ব-১৯ খেলাল না কেন? পুরুষ দলকে চ্যালেঞ্জ সিরিজে রাখার ব্যাখ্যায় ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান বলেন, ‘নারী ক্রিকেটাররা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে খেলছে। পূর্ণাঙ্গ জাতীয় দল খেললে হয়তো অনূর্ধ্ব-১৭ দল খেলানো যেত। কিন্তু এখন অনূর্ধ্ব-১৭ দলকে খেলানো একটু বেশিই হয়ে যেত। নারী ক্রিকেটারদের জন্য ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৫ দলই ঠিক আছে।’
২০২২ সালের বিশ্বকাপে একমাত্র জয়টি ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। এবারও টার্গেট পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো দলকে হারানো, ‘সব দেশই উন্নতি করেছে। আমাদেরও উন্নতি হয়েছে। বিশ্বকাপের এখনো এক মাস বাকি। এ সময়ে আরও গুছিয়ে নিতে পারব আশা করছি। আমরা পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাকে হারাতে চাই।’ বিশ্বকাপে এবারও সাতটি ম্যাচ খেলবেন নিগাররা। বিশ্বকাপ শুরু ৩০ সেপ্টেম্বর। ফাইনাল ৩ নভেম্বর। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ কলম্বোতে ২ অক্টোবর পাকিস্তান, ৭ অক্টোবর গুয়াহাটিতে ইংল্যান্ড, ১০ অক্টোবর নিউজিল্যান্ড, ১৩ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকা ও ১৬ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ তিনটি বিশাখাপট্টমে, ২০ অক্টোবর কলম্বোতে শ্রীলঙ্কা এবং ২৬ অক্টোবর বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিপক্ষে খেলবে নিগার বাহিনী।