ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি অবরোধ ও বর্বর হামলার কারণে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় চরম অনাহারে দিনাতিপাত করছে কমপক্ষে ১০ লাখ নারী ও কিশোরী। শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, গাজার নারী ও মেয়েরা ব্যাপক অনাহার, সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এখানে ক্ষুধা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। নারী ও মেয়েরা জীবন বাঁচাতে ক্রমেই বিপজ্জনক কৌশল নিতে বাধ্য হচ্ছেন- যেমন খাবার ও পানি খুঁজতে বাইরে এমন স্থানে যেতে হচ্ছে যেখানে গুলি বা হামলায় প্রাণনাশের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। ২০ লাখেরও বেশি মানুষের আবাসস্থল গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ তুলে নেওয়া এবং ‘ব্যাপক পরিমাণে’ মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থাটি। শনিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহার ও অপুষ্টিতে এক শিশুসহ আরও ১১ জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করার পর ইউএনআরডব্লিউএ এই মন্তব্য করেছে।
গাজায় ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর মোট সংখ্যা ২৫১ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ১০৮ জন শিশু।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের মোট সংখ্যা ৬১ হাজার ৯০০ ছাড়িয়ে গেছে এবং আরও ১ লাখ ৫৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ১০৮টি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) একটি যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে বেশির ভাগ প্রধান আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশে ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার কারণে এক ট্রাকও জীবন রক্ষাকারী সহায়তা সরবরাহ করতে পারেনি। কেবল গত মাসেই, ইসরায়েলের যুক্তিতে ‘তারা সাহায্য প্রদানের জন্য অনুমোদিত নয়’ বলে কয়েক ডজন এনজিওর ৬০টিরও বেশি অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে, ২৭ মে থেকে ১৩ আগস্টের মধ্যে, গাজায় সাহায্য চাইতে গিয়ে কমপক্ষে ১ হাজার ৭৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৯৯৪ জন ইসরায়েল সমর্থিত ত্রাণকেন্দ্র জিএইচএফের আশপাশে এবং ৭৬৬ জন বিভিন্ন ত্রাণ সরবরাহ রুটে নিহত হয়েছে। এই হত্যার অধিকাংশ ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হাতে ঘটেছে।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করে বলেছিল, গাজার মোট ২৪ লাখ মানুষের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ কয়েক দিন ধরে কোনো খাবার পাচ্ছে না। সূত্র : সিনহুয়া