নরসিংদীর পাঁচদোনা মোড়ে সিএনজি স্টেশন দখল, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশের গাড়িতে হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ দুজনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত পাঁচদোনা মোড় এলাকায় চলে এ সংঘর্ষ। পুলিশ উপস্থিত থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। গুলিবিদ্ধরা হলেন পাঁচদোনার তাইজুদ্দিনের ছেলে হামিদ মিয়া (২৮) ও বিল্লাল মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া (২৮)। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর এ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একই ইউনিয়নের শ্রমিক দল সাধারণ সম্পাদক আলম মিয়া নিহত হন। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আধিপত্য বিস্তার, ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজি এবং পাঁচদোনা মোড়ের সিএনজি স্টেশন দখল নিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি লালু মিয়া ও বিএনপি কর্মী মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে বিরোধ শুরু হয়। এ নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও পাল্টাপাল্টি হামলা ঘটে। সর্বশেষ গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পাঁচদোনা মোড়ে ফুটপাতের রাস্তা ও সিএনজি স্টেশন দখল কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই পক্ষের লোকজন। রাত ১২টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলে সংঘর্ষ। গুলিবিদ্ধ হয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাসান মিয়া (২৮) বলেন, ‘সংঘর্ষের মূল কারণ আধিপত্য বিস্তার।’ সাবেক ইউপি সদস্য লাল মিয়া ও মোসাদ্দেক দুজনই বিএনপি নেতা। সংঘর্ষে আহত আরও চারজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
নরসিংদী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, ‘সন্ধ্যায় সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই পক্ষই মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। আমরা উভয় গ্রুপের মাঝে অবস্থান করছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ আধিপত্য বিস্তার, এলাকা দখল ও নিয়ন্ত্রণ।’ এক পক্ষের নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘গত দুই দিন আমার তিনজন লোককে লালু মিয়ার লোকজন পিটিয়ে আহত করেছে। আমি কিছু বলি নাই। গতকাল সন্ধ্যায় আমার একজন কর্মীকে একা পেয়ে মারধর করে। আমরা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে লালু মিয়ার লোকজন পুলিশের গাড়িতেও হামলা চালায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাকিজা কারখানা থেকে আমরা ঝুট কিনেছি। অগ্রিম ১৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু লালু মিয়া ও তার লোকজন আমাদের বাধা দেয় ও হামলা চালায়। আমার দুজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে।’ পাঁচদোনা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি লালু মিয়াকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি।