জেলার মুরাদনগরের আলোচিত ধর্ষণ অভিযোগের মামলা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী। পর্নোগ্রাফি আইনে গ্রেপ্তার চার যুবকের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে মুরাদনগর থানা পুলিশ। গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা কোর্ট পরিদর্শক সাদেকুর রহমান। নারীকে নির্যাতন ও তাঁর বিবস্ত্র ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফজর আলীর ছোট ভাই শাহপরান নির্দেশদাতা হিসেবে জড়িত সন্দেহে তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। ভুক্তভোগীর মামলা, স্থানীয় ও পুলিশের সূত্র জানান, উপজেলার বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামের ফজর আলীর ধর্ষণের শিকার হন এক নারী। ফজর আলী মাদক, ডাকাতি, সুদের ব্যবসা, জুয়াসহ নানান অপরাধে যুক্ত। পুলিশ ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্ত ফজর আলী (৩৮) পুলিশের প্রহরায় এখন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় ভিডিও ধারণ করে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন একই গ্রামের অনীক, সুমন, রমজান ও বাবু। তাদের গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল কুমিল্লার ১১ নম্বর আমলি আদালতে তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী নারী জানান, ফজর আলী নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে তাঁর মা ৫০ হাজার টাকা ধার নেন। টাকা নিয়ে তার সঙ্গে কথা হতো। এটি মেনে নিতে পারেননি ফজর আলীর ছোট ভাই শাহপরান। এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। ২৬ জুন রাত সাড়ে ১১টার সময় ওই নারীর বাবার বাড়িতে যান ফজর আলী। ১৫ দিন ধরে তিনি বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। ফজর আলী যে সময় ভুক্তভোগীর বাড়িতে যান, ওই সময়ে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য বাড়ির অন্য সবাই বাইরে অবস্থান করছিলেন। এ সুযোগে ঘরে প্রবেশ করেন ফজর আলী। ফজর আলী ঘরে প্রবেশের তিন মিনিটের মধ্যে চার যুবক এসে ওই নারী ও ফজর আলীকে আটক করে বেদম মারধর করে। এ সময় বিবস্ত্রের পর ভিডিওচিত্র ধারণ করা হয়। স্থানীয়দের ধারণা, ফজর আলীর পেছনে তরুণদের লাগিয়ে দেন তার ভাই শাহপরান। ২৭ জুন ফজর আলীকে আসামি করে ধর্ষণের মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। এদিকে বিবস্ত্র ও মারধরের ভিডিওচিত্র ২৮ জুন সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। ওই নারী রবিবার জানিয়েছেন, ‘যা হওয়ার হয়েছে। বিচার হলে তো আর ইজ্জত ফিরে আসবে না।’ তিনি এ ঘটনায় করা ধর্ষণ মামলাটি আর পরিচালনা করতে চান না। গতকাল তিনি বলেছেন, স্বামী ও স্থানীয়দের কথায় মামলা তুলে ফেলার কথা আগে বললেও এখন তিনি মামলা চালিয়ে যাবেন। মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ, মারধর ও সমাজমাধ্যমে ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ফজর আলীর ভাই শাহপরানকেও পুলিশ গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।