গত কয়েক দিন ধরে ভারতের হিমাচলের বিভিন্ন প্রান্তে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। কোথাও কোথাও আবার একই দিনে পর পর কয়েক বার ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। তার জেরে হড়পা বান এবং ধসও নামছে জায়গায় জায়গায়। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ হিমাচলে।
আজ মঙ্গলবার সকালে মন্ডী জেলার করসোগে পর পর চার বার মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। বসতি এলাকায় হুমড়মুড়িয়ে নেমে আসে হড়পা বান। তার জেরে বেশ কিছু বাড়ি ভেসে গিয়েছে। নিখোঁজ অনেকে। এক জনের মৃত্যুর আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
মন্ডী জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলার চার জায়গায় মঙ্গলবার সকালে ভারী বৃষ্টি হয়। অনেকই ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। বহু গাড়ি, বেশ কিছু বাড়ি ভেসে গিয়েছে। অনেক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হড়পা বানে পটিকারী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রেরও ক্ষতি হয়েছে। বিপাশা নদী বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। জলের চাপ বাড়তে থাকায় শেষমেশ পন্ডোহ বাঁধের গেট খুলে দেওয়া হয়। তাতে প্লাবিত হয় বহু এলাকা। অন্য দিকে, কিরতপুর-মনালী জাতীয় সড়কে ধস নামার ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া ভবন জানিয়েছে, চম্বা, কাংড়া, কুল্লু, মন্ডী, শিমলা, সোলন, সিরমৌর জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হবে। রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়াগায় বৃষ্টির চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ৬ জুলাই পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া ভবন জানিয়েছে, শুধু জুনেই ৩৭ শতাংশেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে। উনা, বিলাসপুর, হমীরপুরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। রাজ্যটির ১৩০টি জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও পানি সরবরাহও বন্ধ হয়ে গেছে।
রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর জানিয়েছে, ভূমিধসের জেরে মন্ডী এবং সিরমৌরে মোট ২৫৯টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মন্ডীতে পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। মঙ্গলবার স্কুল-কলেজগুলিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, গত ২০ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে। রাজ্যে জুন মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০১ মিলিমিটার। কিন্তু এ বছর জুনে ১৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল