ব্যবসার পরিবেশের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে কাজ করা জাপানি কোম্পানিগুলো। এ ছাড়াও সরকারের অস্পষ্ট নীতি ব্যবস্থাপনা, বৈদ্যুতিক অবকাঠামোর ঘাটতি, আইনের অস্পষ্টতা ও জটিলতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও প্রধান ঝুঁকি বলে মনে করেন তারা। জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে আরও বলা হয়, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশের ব্যবসায়িক আস্থা সূচক ৪১ দশমিক ৮ থেকে কমে ৬ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসে। তবে ২০২৫ সালে এ সূচক বৃদ্ধি পেয়ে ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে আশা করছেন। জাপানিদের ব্যবসা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ভারতের পরের অবস্থান বাংলাদেশ। এ ছাড়াও প্রায় ৫৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী।
জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়াতে সস্তা শ্রম ও বাজার সুবিধাকে গুরুত্ব দিয়েছেন জাপানি ব্যবসায়ীরা। সস্তা শ্রম ও বাজার সম্ভাবনার জন্য ব্যবসার পরিবেশের দিক থেকে বাংলাদেশকে শীর্ষে রেখেছে ৬১ দশমিক ৩ শতাংশ জাপানি কোম্পানি। এ ছাড়া সহজে শ্রমিক ও কর্মচারী পাওয়ায় ২৯ দশমিক ৩ শতাংশ, ভাষাগত সুবিধার জন্য ২০ শতাংশ ও কোম্পানি করছাড়, প্রণোদনা সুবিধা ও বিশেষায়িত জনশক্তির জন্য ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ জাপানি ব্যবসায়ী বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখছেন। বাংলাদেশে ব্যবসা করার জন্য পণ্য সংগ্রহের সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে স্থানীয় পণ্যের মান ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বলে মনে করেন। এ ছাড়াও প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ সরবরাহে যোগ্য সরবরাহকারীর অভাবও রয়েছে বলে জানিয়েছেন। উৎপাদন খরচ কমাতে স্থানীয় পর্যায়ে কেনাবেচা বৃদ্ধিতে নজর বাড়াতে বলা হয় জরিপে।
জরিপে বলা হয়, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা ৫০ শতাংশ জাপানি কোম্পানির মুনাফা বাড়তে পারে। এ ছাড়া ২০২৫ সালে এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় কাজ করা জাপানি কোম্পানিগুলো সবচেয়ে বেশি মুনাফা করবে বলে জরিপে উঠে এসেছে। শ্রীলঙ্কার পরের অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান, ভারত, ফিলিপাইনস, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের। গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে পরিচালিত এ জরিপে বাংলাদেশে কাজ করা ১৭৫টি জাপানি কোম্পানিসহ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মোট ১৩ হাজার ৭২৭টি জাপানি কোম্পানি এ জরিপে অংশ নেয়। বাংলাদেশের বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে, যেখানে তাদের অংশীদারি ৭৪ দশমিক ২ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে আছে জাপানি ও চীনা কোম্পানিগুলো। যাদের অংশীদারি যথাক্রমে ৬৯ দশমিক ৭ শতাংশ ও ৪২ দশমিক ৪ শতাংশ।