পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া রেলস্টেশন এলাকা থেকে এক নারীর গলা কাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনা এখনো কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ। বিশেষ করে ফিঙ্গারপ্রিন্টেও পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় মামলার তদন্তে অনেকটাই জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ ঘটনায় মিন্টু নামে এক শীর্ষ মাদক কারবারিকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও দায় স্বীকার করেননি তিনি। ফলে ক্লুলেস এ হত্যাকাণ্ডে এখন অনেকটা অন্ধকারে তদন্তকারীরা। তবে ওই নারী ৩-৪ মাসের গর্ভবতী বলে ধারণা করা হচ্ছে- প্রেমের সম্পর্ক ধাপাচাঁপা দিতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর ওই নারীকে গলা কেটে হত্যা করা হতে পারে। এ সন্দেহ আরও দানা বেঁধেছে লাশের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া একটি হাতঘড়িকে কেন্দ্র করে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টদের ধারণা- ওই নারীর পূর্ব পরিচিত কারও হাতে ছিল ঘড়িটি। মোটামুটি দামি ঘড়ি হওয়ায় এটি পরিধানকারী ব্যক্তি সচ্ছল বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ এখন ঘড়ির মালিককে খুঁজছে। পুলিশের ধারণা, ঘড়ির মালিককে পাওয়া গেলে হত্যার রহস্য উন্মোচিত হবে। এদিকে ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকার কেউ না চিনতে পারায় পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, ওই নারীকে অন্য কোনো এলাকা থেকে ওখানে ডেকে আনা হয়েছিল। তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে কি না এবং গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন আসামি মিন্টু এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না সেটি নিশ্চিত হতে ডিএনএ টেষ্ট করা হবে। এ ছাড়াও ওই নারীর পরনে থাকা জামা-কাপড় ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। গতকাল তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানায়।
এর আগে গত ৫ অক্টোবর সকালে গেন্ডারিয়া রেলস্টেশনের উত্তর পাশে দেয়ালঘেঁষা স্থানে কাদা মাখা অবস্থায় ওই নারীর গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়। লাশ উদ্ধারের সময় নারীর পরনে খয়েরি রঙের সালোয়ার কামিজ এবং খয়েরি সাদা ফুলতোলা ওড়না ছিল। লাশ উদ্ধারের পরের দিন পুলিশ বাদী হয়ে গেন্ডারিয়া থানায় এ ব্যাপারে হত্যা মামলা করে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, লাশ উদ্ধারের পর সিআইডির ক্রাইম সিনের মাধ্যমে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওই নারীর জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় সেটি সম্ভব হয়নি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গেন্ডারিয়া থানার এসআই মো. তৌফিক আনাম জানান, ধর্ষণের পর স্যুইচ গিয়ার দিয়ে গলা কাটা হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।
গেন্ডারিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনজুরুল হাসান মাসুদ বলেন, গর্ভবতী ওই নারীকে হত্যায় সত্যিকার জড়িত খুনিদের আইনের আওতায় আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।