সংবিধানের মতো বিষয়ে হাত দেওয়াকে অনুচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ন ম মুনীরুজ্জামান। অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কার উদ্যোগে সমর্থন জানালেও সংবিধানে হাত দেওয়া উচিত হবে না বলে জানান তিনি। তার মতে-সংবিধান শুধু পরিবর্তন করতে পারে জনপ্রতিনিধি বা যারা নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে আসবে। তাই যেটুকু আমাদের করা সম্ভব, সেটুকু শুধু আমাদের করা উচিত। বর্তমান আমরা যে জটিল পরিস্থিতিতে আছি, সেটা আরও জটিলতর হবে। গতকাল ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সুশীল সমাজের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
মুনীরুজ্জামান বলেন, সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, যত শিগগির সম্ভব- আমরা যাতে গণতন্ত্রে উত্তরণ করতে পারি। কারণ এই জুলাই-আগস্টের যে বিপ্লবটা ঘটে গেছে, তার একটা প্রধান আকাক্সক্ষা ছিল গণতন্ত্রহীনতা থেকে উত্তরণ। রাষ্ট্রের সব সংস্কার বর্তমান সরকার করতে পারবে, সেই উচ্চাশা করা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন মুনীরুজ্জামান। তিনি বলেন, এই পর্যায়ে যেসব সংস্কার প্র্যাকটিকাল, সেগুলো থেকে আমাদের দুটো সংস্কারের ব্যাপারে জোর দিতে হবে। কোনো সংস্কারই টেকসই হবে না- যদি এর সঙ্গে রাজনৈতিক নেতারা বা রাজনৈতিক দলের একমত না হয়। মুনীরুজ্জামান বলেন, আমরা ইতিপূর্বে দেখেছি বিভিন্ন সময় অনেক সংস্কার হয়েছিল। ১/১১ সময় অনেক সংস্কার হয়েছিল। কোনোটাই টেকসই হয়নি। কাজেই আমাদের উচিত হবে- এমন ধরনের সংস্কার করা, যেগুলো টেকসই হবে, যেগুলো থেকে জাতি ভবিষ্যতে উপকার পাবে। তিনি বলেন, জাতীয় নেতারা বা রাজনৈতিক নেতাদের পাশ কাটিয়ে কোনো কিছু করলে সেটা ঠিক হবে না; এটা আমাদের সবসময় মনে রাখা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের মানুষ ১৬-১৭ বছর শুধু সংগ্রাম করে নাই, তাদের ভোটের অধিকারও হরণ করে নেওয়া হয়েছিল। তাদের যে ভোটের অধিকার, সেটা তাদেরকে যত শিগগির সম্ভব ফিরিয়ে দিতে হবে। সেটা উচিত হবে আমাদের সবার ও এই কমিশনের এবং অন্যান্য সকলের। এমন কোনো জিনিসে হাত দেওয়া উচিত হবে না, যেটা থেকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আরও বিলম্ব হয়। আলোচনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও ছিলেন বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।