গোপালগঞ্জে একটি রাজনৈতিক দলের জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আহ্বান করা জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা সংঘবদ্ধভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। সেনাবাহিনীর ওপর বিপুলসংখ্যক ককটেল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং একপর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগে বাধ্য হয় সেনাবাহিনী।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। জনসাধারণকে ধৈর্য ও সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে আইএসপিআর। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গোপালগঞ্জে একটি রাজনৈতিক দলের জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আহ্বান করা জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে এলাকার একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা বুধবার সংঘবদ্ধভাবে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিক আহত হন। এ ছাড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সরকারি যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও স্থানীয় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করে এবং প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, রাজনৈতিক সংগঠনের সমাবেশ চলাকালে মঞ্চে আবার হামলা চালানো হয়। একই সঙ্গে জেলা কারাগারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। এ অবস্থায় সেনাবাহিনী মাইকে বারবার ঘোষণা দিয়ে হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে তারা সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালায় এবং বিপুল ককটেল, ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগে বাধ্য হয়। পরে সেনাবাহিনী, বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ও পুলিশ যৌথভাবে বিশৃঙ্খলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একপর্যায়ে গোপালগঞ্জে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় গ্রহণকারী ব্যক্তিদের সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে খুলনায় স্থানান্তর করা হয়। সর্বোপরি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পেশাদারি ও ধৈর্যের সঙ্গে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে গোপালগঞ্জে সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। প্রশাসন কর্তৃক জারিকৃত কারফিউ চলমান রয়েছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব এবং প্রশাসনের অন্য সংস্থাগুলো ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় রেখে কাজ করে যাচ্ছে।
চলমান এ রাজনৈতিক সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলায় জেলার জনসাধারণ অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে নিজেদের নিবৃত্ত রেখে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছেন। গুজব বা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে সর্বসাধারণকে ধৈর্য ধারণ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করতে বিজ্ঞপ্তিতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও জননিরাপত্তা রক্ষায় সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।