দেশের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলো ভূমি মন্ত্রণালয় গ্রহণে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
বুধবার সচিবালয়ের ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনার একটা প্রক্রিয়া রয়েছে। এ সম্পর্কে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনেরও একটা সুপারিশ রয়েছে। যদিও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলো এখন আছে আইন মন্ত্রণালয়ের আওতায়। তবে আইন মন্ত্রণালয় থেকে এগুলো যদি ভূমি মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের ক্ষেত্রে আন্তঃমন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেয়া হয় সে ক্ষেত্রে ভূমি মন্ত্রণালয় তা গ্রহণে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, সাব রেজিস্ট্রি অফিসগুলো ভূমি মন্ত্রণালয়ে আনার ক্ষেত্রে শুধু ক্যাবিনেটে আমাদের কার্য পরিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলো ভূমি মন্ত্রণালয়ে আসলে জনবলসহ আসবে। এটা ব্যবস্থাপনায় আমরা সম্মত আছি।
মাঠ পর্যায়ে ভূমি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এর কারণ হচ্ছে, ভূমি সংক্রান্ত আইনগুলো আমাদের সকলের জানা নেই। কিছু জটিলতাও আছে। কিছুক্ষেত্রে আইনগুলো সব সময় ইউজার ফ্রেন্ডলি না। সুতরাং এক্ষেত্রে কিছু ভুলভ্রান্তি হয়। আর এটার সুযোগ নেয় আমাদের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। আমরা যথাযথভাবে তাদের তদারক করি না বা করতে পারি না।
অভিযোগের প্রতিকারের বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু ভূমি কর্মকর্তারা অত্যন্ত তৃণমূল মানুষের সঙ্গে কাজ করে, সে ক্ষেত্রে অনেক অভিযোগ থাকতে পারে। তবে অভিযোগ সর্বাংশে অনেক সময় সত্য নাও হতে পারে। কারণ আমরা দেখেছি অভিযোগের পর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে সংশ্লিষ্ট ভূমি কর্মকর্তারা বলে থাকেন যে স্যার আমাদের ওপর অবিচার করা হয়েছে। আমরা দোষী নই।
তিনি বলেন, তবুও যদি ভূমি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ আসে, অন্যায়ভাবে কারো (গ্রাহকের) ওপর অবিচার করা হয়েছে এবং তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, অভিযোগগুলোর প্রতিকার করার সুযোগ থাকলে, আমরা প্রতিকারের চেষ্টা করি। তবে এ জন্য থানা বা উপজেলা পর্যায়ে কোন আলাদা অভিযোগ সেল করার চিন্তা সরকারের নেই। কারণ উপজেলা পর্যায়ে এসিল্যান্ডের কাছে অভিযোগ করা যায়, ইউএনওর কাছেও করা যায়, এমনকি জেলা প্রশাসকের কাছেও ভূমি সেবা প্রত্যাশীরা অভিযোগ করতে পারেন। এছাড়া আমাদের একটা টেলিফোন হেল্প লাইন আছে, যেখানে ২৪ ঘণ্টায় মানুষ অভিযোগ জানাতে পারে।
মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন কিছু জলমহাল রয়েছে উল্লেখ করে ভূমি উপদেষ্টা বলেন, এটা একটা ইন্টিগ্রেটেড ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হয়ে থাকে। এটার সাথে মৎস্য বিভাগের লোকেরা জড়িত থাকে। তাছাড়া জেলা মৎস্য উন্নয়ন কর্মকর্তাদের সাথে কমিটিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ফিশারম্যান কো-অপারেটিভ সোসাইটিকে বন্দোবস্ত দেয়া হয়। ২০ একরের ঊর্ধ্বে সব জলমহাল ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ (বন্দোবস্ত) দেয়া হয়। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়।
তিনি বলেন, কো-অপারেটিভ সোসাইটি নিবন্ধিত হতে হয়। জলমহাল সমিতিগুলোর রেজিস্ট্রেশন আছে। এটা নিয়ে আমাদের জেলা থেকে সেন্ট্রাল পর্যায়ে কমিটি আছে। ভূমি উপদেষ্টার নেতৃত্বে ২০ একরের উর্ধ্বের জলমহালগুলোর বিষয়ে জাতীয় কমিটি আছে।
তিনি বলেন, যে প্রক্রিয়াই বন্দোবস্ত দেওয়া হোক না কেন তা বাতিল করতে হলে আদালতের রায় লাগবে। এছাড়া যারা এখন পালিয়েছে তাদের অন্য সম্পত্তির ন্যায় ভূমিগুলোও মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিতে আদালতের নির্দেশ প্রতিপালন করা হবে। সূত্র: বাসস
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত