ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিষা প্রিয়াকে কোনোভাবেই ক্ষমা করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে হত্যাকাণ্ডের শিকার তালাল আবদু মাহদির পরিবার। নিহতের ভাই আবদেল ফাত্তাহ মেহদি জানিয়েছেন, ‘‘প্রিয়া অপরাধ করেছেন। তাকে কোনোভাবেই ক্ষমা করা হবে না। তার মৃত্যুদণ্ড হতেই হবে।’’
গতকাল বুধবার (১৬ জুলাই) নিমিষা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে ভারত সরকারের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে আপাতত তা স্থগিত রাখা হয়েছে।
২০০৮ সালে ভারতের কেরালা রাজ্য থেকে নার্স হিসেবে ইয়েমেন যান নিমিষা প্রিয়া। ২০১৭ সালে মাহদির মৃতদেহ উদ্ধারের পর তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি ইয়েমেনের রাজধানী সানার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
আদালতের অভিযোগে বলা হয়, নিমিষা মাহদিকে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ দিয়ে হত্যা করে দেহ টুকরো টুকরো করেন। তবে নিমিষা প্রিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, মাহদি তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন, সব টাকা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন, পাসপোর্ট রেখে দেন এবং বন্দুক দেখিয়ে হুমকি দিতেন। নিমিষা শুধু তার পাসপোর্ট ফেরত পেতে মাহদিকে অচেতন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওষুধের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে মৃত্যু ঘটে।
জানা গেছে, ব্যবসা পরিচালনার জন্য ইয়েমেনি নাগরিক মাহদির সঙ্গে যৌথভাবে ক্লিনিক খোলেন নিমিষা। ২০১৪ সালে তাদের বিরোধ শুরু হয় এবং ২০১৬ সালে মাহদির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তবে পরে মাহদি মুক্তি পেয়ে যান।
২০২০ সালে ইয়েমেনের একটি স্থানীয় আদালত নিমিষা প্রিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আপিল করেও ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্টে তা খারিজ হয়ে যায়। ২০২৪ সালে হুথি বিদ্রোহীদের শীর্ষ রাজনৈতিক পরিষদের প্রেসিডেন্ট মাহদি আল-মাশাত মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন দেন।
নিমিষার মা দীর্ঘদিন ধরে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। ইয়েমেনের সমাজকর্মী স্যামুয়েল জেরোমকে মধ্যস্থতায় নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ‘সেভ নিমিষা প্রিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকশন কাউন্সিল’ নামের একটি সংগঠন ভুক্তভোগী পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ১০ লাখ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, নিমিষার জীবন এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে মাহদির পরিবারের সিদ্ধান্তের ওপর।
বিডি প্রতিদিন/আশিক