সর্বোচ্চসংখ্যক নাগরিকের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ‘ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। অধ্যাদেশ অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এক মাস আগেও বয়স ১৮ বছর হলে ভোটার হতে পারবেন নাগরিকরা। এতে আগামী নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক তরুণ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গতকাল তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। এ ছাড়া ‘মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ ও ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়াও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ভোটার তালিকা সংশোধন অধ্যাদেশের নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতদিন বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হতো, তারা পরবর্তী বছর জানুয়ারিতে এসে হালনাগাদ ভোটার তালিকায় আসতে পারতেন। প্রতি বছর জানুয়ারির ২ তারিখে নির্বাচন কমিশন খসড়া ও মার্চের ২ তারিখে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। তালিকা প্রকাশ এবং পরে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের মাঝামাঝি যারা ভোটার হওয়ার বয়সে উপনীত হন, তারা আর ভোট দিতে পারেন না। পরবর্তী নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। নির্বাচন কমিশন মনে করে যেহেতু তফসিল ঘোষণার আগেই একটা চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত রাখতে হয়, তাই যৌক্তিক সময়ের মধ্যে যারা ভোটার হওয়ার উপযুক্ত হন, তারা যেন ভোটার হতে পারেন। সংশোধিত অধ্যাদেশের ফলে তফসিল ঘোষণার অন্তত এক মাস আগে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তারা এখন ভোটার হতে পারবেন।
অঙ্গ প্রতিস্থাপন সহজ হচ্ছে : লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের ভেটিং সাপেক্ষে মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অনেকের কিডনি বিকল হয়, অনেকের কর্নিয়া নষ্ট হওয়ায় চোখে দেখতে পান না। অঙ্গ প্রতিস্থাপনে এসব মানুষ স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে পারেন। কিন্তু আগের আইন অনুযায়ী অঙ্গপ্রত্যঙ্গ শুধু খুবই কাছের আত্মীয় যেমন ভাই-বোন, বাবা-মা থেকে নেওয়া যেত। এটা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে অঙ্গ প্রতিস্থাপনে নিয়োজিত বড় বড় হাসপাতাল ও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আইন দেখেছে। সে অনুযায়ী নতুন অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এখন বাংলাদেশে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান সহজ হবে। এখন আত্মীয়ের সংজ্ঞা কিছুটা বিস্তৃত করা হয়েছে। আগে ভাতিজা, ভাগিনা এরা অঙ্গ দিতে পারতেন না। এখন তারাও দিতে পারবেন। এতে অনেককেই কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের জন্য আর বিদেশে যেতে হবে না। বাংলাদেশের হাসপাতালগুলো এ সার্ভিস দিতে পারবে। বাংলাদেশের জন্য এটা যুগান্তকারী আইন।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, এ খসড়ার ফলে বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডে বাইরে থেকেও কিছু লোক নিয়োগ দেওয়া যাবে।