জুলাই-আগস্টে গণহত্যার প্রথম মামলা হিসেবে পুরান ঢাকার চানখাঁরপুলের ঘটনা তদন্ত শেষ হয়েছে। ১৯৫ দিনের মধ্যে এ তদন্তকাজ সম্পন্ন করে আটজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ৯০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এর আগে গত রবিবার চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আসামিরা হলেন ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা বিভাগের সাবেক এডিসি শাহ আলম মো. ইমরুল, সাবেক এসি রমজান, শাহবাগ থানার সাবেক পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল সুজন, ইমাদ হোসেন ও নাসিরুল ইসলাম। এর মধ্যে এই মামলার গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন পরিদর্শক আরশাদ, কনস্টেবল মো. সুজন, ইমাদ হোসেন ও নাসিরুল ইসলাম।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীর চানখাঁরপুল এলাকায় এই আসামি নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিককে গুলি করলে তারা শহীদ হন। ট্রাইব্যুনালে আরও জানানো হয়, তদন্তকালে পলাতক আসামি ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ অন্য আসামিরা সরাসরি তত্ত্বাবধান বা অংশগ্রহণ, অধীনস্থদের নির্দেশ প্রদান, সহযোগিতা, কোনো ব্যবস্থা না নেওয়াসহ অন্যান্য উপায়ে ভূমিকা রাখার জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বলা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘চানখাঁরপুলের গণহত্যার তদন্তকাজ শেষ হয়েছে। রবিবার তদন্ত সংস্থা আমাদের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার প্রথম কোনো ঘটনার তদন্তের কাজ শেষ হয়েছে।’ তিনি বলেন, যারা সিনিয়র অফিসার তাদের বিরুদ্ধে কমান্ড রেসপনসিবিলিটির অভিযোগে এবং যারা সরাসরি গুলি করেছে বিভিন্ন ভিডিওর মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ মিলেছে।
যে কারণে এই আটজনের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পুলিশের আইজির সংশ্লিষ্টতাও রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রতিবেদনের পর আমাদের এখন ফরমাল চার্জ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হবে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে এটা আমরা আদালতে দাখিল করব। পরবর্তী সময়ে আইনের যে প্রক্রিয়াগুলো আছে সেই প্রক্রিয়া অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।’