উচ্চশিক্ষার সুযোগসহ আট দফা দাবিতে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সব গেট বন্ধ করে দিয়ে সকাল থেকে বিক্ষোভ করেন কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে পূর্বঘোষিত পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে ‘কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদ’ ব্যানারে একই স্থানে অবস্থান নেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এতে মুখোমুখি অবস্থানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ চলায় সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
রবিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে ঘোষিত ‘অ্যাগ্রি ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সকাল ৯টা থেকে ‘কৃষি ডিপ্লোমা ছাত্র অধিকার আন্দোলন’ ব্যানারে বিক্ষোভ শুরু করেন ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা। এ সময় অধিদপ্তরের প্রতিটি গেটে তালা মেরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এতে ভিতরে প্রবেশ করতে না পেরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাইরে অপেক্ষা করেন। গেট বন্ধ থাকার কারণে ফার্মগেটমুখী সড়কে যান চলাচলে বড় ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। এদিকে দুপুরের দিকে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো অযৌক্তিক দাবি উল্লেখ করে খামারবাড়ির বাইরে অবস্থান নেন শেকৃবি শিক্ষার্থীরা। তারা ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ২০ মিনিটের আল্টিমেটাম দেন খামারবাড়ি ত্যাগ করার জন্য। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্থান ত্যাগ না করায় শেকৃবি শিক্ষার্থীরা গেটের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় সেনা-পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি চলে শিক্ষার্থীদের। দুই পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়, পাল্টাপাল্টি স্লোগান ও উত্তেজনা চরমে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা-পুলিশ সদস্যরা সতর্ক অবস্থান নিয়ে দুই পক্ষকে আলাদা করেন। পরে বেলা আড়াইটার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা খামারবাড়ি ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে ‘কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদ’-এর পক্ষে পাঁচ দফা দাবি কৃষি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর জমা দেন শেকৃবি শিক্ষার্থী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য মো. তৌহিদ আহমেদ আশিক। আন্দোলনের বিষয়ে কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল সাইদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গত সেপ্টেম্বরে আমরা ৮ দফা দাবি জানিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টাদের নিকট স্মারকলিপি দিয়েছি। এরপর অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন ও শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করি। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজকের ব্লকেড পালিত হয়। কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় আমাদের পাঁচ সদস্যের একটি দল অংশ নিয়েছে। তারা আশ্বাস দিয়েছেন, আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে। তা না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। মো. তৌহিদ আহমেদ আশিক বলেন, ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের আট দফা দাবি কৃষি শিক্ষা ও কৃষি কার্যক্রমের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের পক্ষে আমরা পাঁচ দফা দাবি মহাপরিচালক ও ডিডি বরাবর জমা দিতে চাইলে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের অবরোধে তা ব্যাহত হয়। পরে তাদের অবস্থান ত্যাগের পর আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি পেশ করি।