ময়মনসিংহের ভালুকায় ঢাকাগামী বাসে তল্লাশির সময় একটি ব্যাগ দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। ভেতরে কী আছে—জানতে চাইলে বাহক দাবি করেন, ব্যাগে অর্জুনগাছের ছাল আছে। কিন্তু গন্ধ আসায় ব্যাগ তল্লাশি করতেই বেরিয়ে আসে মানুষের মাথার খুলি ও হাড়। এ সময় পাচারকারী ময়মনসিংহ সদরের চরকালিবাড়ী এলাকার মো. সাইফুল (৪৫), সুতিয়াখালী গ্রামের ফারুক হোসেন ওরফে শাহিন (৪৮) ও শেরপুরের শ্রীবর্দী উপজেলার মাটিয়াকুড়া গ্রামের আলমগীর হোসেন (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, রোববার ২০এপ্রিল দিবাগত রাত একটার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের সিডস্টোর বাজার এলাকায় ময়মনসিংহ-ঢাকাগামী লেনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ তল্লাশি চলছিল। এ সময় শেরপুর থেকে ঢাকাগামী ময়মনসিংহ জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের একটি বাসে তল্লাশি চালানো হয়। বাসের ভেতের সাদা-কালো রঙের একটি ট্রাভেল ব্যাগ দেখে সন্দেহ হয় যৌথ বাহিনীর সদস্যদের।
ব্যাগের সঙ্গে থাকা ব্যক্তি মো. সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, ব্যাগে অর্জুনগাছের ছাল রয়েছে। তখন ব্যাগ খুলে ভেতরে মানবদেহের কঙ্কাল পাওয়া যায়। ব্যাগের ভেতরে ৩টি মাথার খুলি, মানবদেহের বড় হাড় ২৮টি, মেরুদণ্ডের হাড় একটি, মৃত মানবদেহের বিভিন্ন অংশের হাড়ের ৫০টি টুকরা পাওয়া যায়। এ সময় সাইফুলের সঙ্গে থাকা ফারুক হোসেন ও আলমগীর হোসেনকেও আটক করা হয়। পাশাপাশি যাত্রীবাহী ময়মনসিংহ জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়ন পরিবহনের বাস জব্দ করা হয়।
মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যাজন আইন ১৯৯৯-এর ১০ ধারায় অপরাধ করায় তাঁদের বিরুদ্ধে ভরাডোবা হাইওয়ে থানার এসআই সবুজ মিয়া বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন।
ভরাডোবা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রোববার রাতে নিয়মিত তল্লাশি চলাকালে শেরপুর থেকে ঢাকাগামী ময়মনসিংহ শ্রমিক ইউনিয়নের একটি বাসের একটি ব্যাগ থেকে গন্ধ আসতে থাকে। ব্যাগের সঙ্গে থাকা ব্যাক্তিকে ভেতর কী আছে—জানতে চাইলে বলা হয় অর্জুনগাছের ছাল। কিন্তু কেন গন্ধ আসছে, এর কারণ জানতে ব্যাগ তল্লাশি করে ভেতরে মানুষের কঙ্কাল পাওয়া যায়। ওই সময় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা কঙ্কালগুলো ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। চক্রের তিন সদস্যকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল