রংপুর বিভাগ বাস্তবায়ন হয়েছে ২০১০ সালে। সিটি করপোরেশন বাস্তবায়নের এক যুগ পেরিয়েছে। রংপুরের উন্নয়নে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল, যার অধিকাংশ এখনো আলোর মুখ দেখেনি।
যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি তার অন্যতম এখন পর্যন্ত ‘রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ বাস্তবায়ন না হওয়া। ১১ বছর আগে মন্ত্রিপরিষদে রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের অনুমোদন দিলেও ওই প্রকল্প লাল ফিতায় বন্দি হয়ে রয়েছে। ফলে রংপুর মহানগর ঘিরে কোনো মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। রংপুরে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের কথা ছিল। বিগত সরকারের সময় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়েছিল। বাস্তবে রংপুরবাসী এখন পর্যন্ত পাইপলাইনের মধ্যমে গ্যাস পায়নি। নভো থিয়েটার, হাইটেক পার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কাজ হয়েছিল। কিন্তু তা-ও আলোর মুখ দেখেনি। তারাগঞ্জে রংপুর পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, মিঠাপুকুরে ইকো পার্ক সংস্কার, পীরগাছায় কৃত্রিম মহিষ প্রজনন কেন্দ্রসহ বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নেওয়া হলেও সেসব এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। রংপুর মহানগরসহ বিভাগের অন্যান্য জেলার সড়ক দীর্ঘদিন থেকে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। সড়ক সংস্কারে আন্দোলন হলেও কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণের কথা ছিল। প্রকল্প পাসও হয়েছিল। কিন্তু আলোর মুখ দেখেনি। বিগত কয়েকটি একনেক সভা এবং বাজেটে রংপুরের উন্নয়ননের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে এমন অভিযোগ রংপুরবাসীর। বর্তমান সরকার গত সোয়া বছরে রংপুরের জন্য বড় কোনো প্রকল্প গ্রহণ করেনি। ফলে এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে হতাশা বাড়ছে।
এ ছাড়া গঙ্গাচড়ায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ প্রক্রিয়াধীন ছিল। তার কোনো খবর নেই। পীরগঞ্জে খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তা বাস্তবায়নে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। বিটিভি উপকেন্দ্রটি পূর্ণাঙ্গ করার কথা ছিল। যুগ পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি। এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। কারণ প্রতি বছর তিস্তা নদী লাখ লাখ কোটি টাকার ফসল ও জমি গিলে খাচ্ছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে আান্দোলন-সংগ্রাম হলেও এটিও আশ্বাসে সীমাবদ্ধ রয়েছে। সব মিলিয়ে দেখা গেছে, কমপক্ষে ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প স্থবির অবস্থায় পড়ে রয়েছে।রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ১১ বছর আগে মন্ত্রিপরিষদ অনুমোদন দিয়েছে। অথচ দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এটি বাস্তবায়ন হয়নি। রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং মহানগর ঘিরে কোনো মাস্টারপ্ল্যান না থাকায় অপরিকল্পিত নগরায়ণ বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
রংপুর মহানগর সুজন সভাপতি ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, ‘রংপুর বরাবরই উন্নয়নবঞ্চিত। এ বৈষম্যের অবসান হওয়া দরকার।’