বগুড়ার বাজারে থামছে না পেঁয়াজের ঝাঁজ। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। গত সপ্তাহে বগুড়া শহরের বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে যার মূল্য ৯৫ থেকে ১০০ টাকা।
এদিকে মৌসুম শেষে দেশি পেঁয়াজের যোগান কমে যাওয়ায় এবং ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। গত মাসে মুড়িকাটা পেঁয়াজ লাগানো হয়। কিন্তু কয়েকদিন আগের টানা বৃষ্টিতে সেসব পেঁয়াজ গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। এমন অবস্থায়ও পেঁয়াজের দাম বাড়ার জন্য দায়ী বলে মনে করছেন তারা।
এছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি অনুমতি অনেকদিন ধরে বন্ধ থাকায় দেশি পেঁয়াজের ওপর চাপ বেড়েছে। চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে কয়েকদিনের মধ্যে যদি যোগান না বাড়ে তাহলে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে।
জানা যায়, এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৫২ শতাংশ। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের হঠাৎ দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, শেষ সময়ে কৃষকের ঘরে পেঁয়াজ কমে গেছে। পেঁয়াজ চলে গেছে মজুতদারদের হাতে। প্রতিবছর এই সময় পেঁয়াজের সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ানো হয়। এবারও মজুতদাররা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজ আটকে রেখে দাম বাড়াচ্ছে। সরকারি সংস্থাগুলোকে এখনই তদারকি ও নজরদারি বাড়াতে হবে। সারাদেশে কী পরিমাণ পেঁয়াজ মজুত আছে তা খতিয়ে দেখার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান তারা।
রবিবার (৯ নভেম্বর) বগুড়া শহরের রাজাবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। আর পাইকারীতে ৯৫ থেকে ১০০টাকায়। অথচ কয়েক দিন আগে পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা।
রাজাবাজারে পাইকারী ব্যবসায়ী কৃষ্ণ জানান, প্রতি বছর এসময় পেঁয়াজের কিছুটা সংকট থাকে। কৃষকের ঘরে পেঁয়াজ কমে গেছে। যার ফলে কয়েক দিন ধরেই মোকামে সরবরাহ কমে। এ কারণে খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে।
রাজাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা পরিমল প্রসাদ রাজ জানান, এ বছর পেঁয়াজের আমদানি খুব বেশি হয়নি। দেশি পেঁয়াজের ওপর বাজার নির্ভর ছিল। অক্টোবর পর্যন্ত বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ থাকলেও এখন তা কমে গেছে। ফলে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে বাজারে আগাম পেঁয়াজ আসা শুরু হতে পারে। তখন দাম কমবে। বৃষ্টির কারণে এ বছর কিছুটা দেরিতে উৎপাদনের কাজ শুরু করায় নতুন পেঁয়াজ জমি থেকে ঘরে তুলতে আরও কিছুটা সময় লাগবে কৃষকদের।
বগুড়া ফতেহ আলী বাজারে বাজার করতে আসা আব্দুল মালেক জানান, কয়েক দিন আগেও ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ কিনেছি। এখন বাজারে এসে দেখি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিনই বাজারে এসে নতুন দাম শুনতে হচ্ছে। এতে আমাদের মত সাধারণ মানুষদের সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/জামশেদ