শীতের আগমনের আগেই দিনাজপুরের মাঠে এখন জমে উঠেছে শীতকালীন সবজি তোলার প্রতিযোগিতা। আগাম ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, সিম, টমেটো, লালশাক, পলংশাক, পুইশাক ও বরবটির ফলনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ইতোমধ্যে স্থানীয় বাজারে আগাম ফুলকপি-বাঁধাকপির সরবরাহ শুরু হয়েছে, আর তাতে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
শীতের প্রধান সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপির আগাম চাষ এখন অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। অল্প সময়ে অধিক লাভজনক এই ফসলের বাজার চাহিদা ভালো থাকায় চাষের পরিধি দিন দিন বাড়ছে। নভেম্বরের শুরুতেই বাজারে আগাম জাতের ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হওয়ায় কৃষকেরা আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন। ফলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায়ও সরবরাহ করা হচ্ছে এই সবজি।
কাহারোল উপজেলার রাঙ্গাচাটা হাট এলাকার কৃষক সাধীন বলেন, প্রতিবছর আগাম জাতের ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করি। যদিও এটি কষ্টসাধ্য, তবে লাভও দ্বিগুণ হয়। এবার চারার দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি এক লাখ টাকারও বেশি লাভ হয়েছে।
চামদুয়ারী গ্রামের কৃষক সাজ্জাত আলী জানান, প্রতিবছর আগাম সবজি চাষ করে ভালো লাভ পাচ্ছি। আগাম জাতের চাষে ঝুঁকি থাকলেও ফলন ভালো হলে লোকসানের আশঙ্কা থাকে না।
বীরগঞ্জের কৃষক মামুন ও মিলন আগাম ফুলকপি চাষ করে এখন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাঁরা জানান, বাজারে ভালো দাম ও অনুকূল আবহাওয়ায় এবার ফলনও আশানুরূপ হয়েছে।
একই উপজেলার কৃষক ফরহাদ হোসেন বলেন, স্থানীয় কৃষি খামার থেকে ‘মার্বেল’ ও ‘আর্লি স্পেশাল’ জাতের ফুলকপির বীজ নিয়ে পাঁচ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। চারা রোপণের ৪৫-৫০ দিনের মধ্যেই ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি শুরু করেছি। উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ অনেক বেশি।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, আগাম জাতের ফুলকপি-বাঁধাকপি চাষে ঝুঁকি কিছুটা বেশি থাকলেও বাজারদর ভালো থাকলে কৃষকেরা সহজেই দ্বিগুণ লাভবান হতে পারেন। এ কারণে দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলে আগাম সবজি চাষ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল