জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর যমজ ভাই জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেছেন, হাসিনার সাথে আপস করিনি তাই আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিএনপিতে যোগদান করেছি। স্বৈরাচার হাসিনা গত ১৭ বছর ধরে নানা ভাবে নির্যাতন করে গেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর। বিভিন্ন সময়ে গুম, খুন, হামলা মামলার ভয় ভীতি দেখিয়ে বিএনপিকে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য করেছিলো। কিন্তু জুলাইয়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে খুনি হাসিনা মুক্ত আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এই বাংলাদেশকে নতুন করে সাজিয়ে তুলতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা যে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছি, সেটি সমৃদ্ধ একটি বাংলাদেশ। আর এমন বাংলাদেশ গড়তে পারেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর সুযোগ্য সন্তান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি ছাড়া বাংলাদেশকে আর কেউ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন না। তৃণমূল থেকে সাধারণ মানুষ বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে থাকলে একটি সমৃদ্ধ দেশ আমরা সকলে মিলে গড়বো। ধানের শীষের পক্ষে তিনি ভোট চেয়ে স্লোগানে বলেন, নবীন প্রবীণ বাঁধো জোট ধানের শীষে দেবো ভোট।
রবিবার (৯ নভেম্বর) বিকেল ৪ টায় বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মীর মুগ্ধ স্কয়ারে উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ছাত্র-জনতা সমাবেশে তিনি বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন মীর শাহে আলম। সমাবেশে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন।
মীর স্নিগ্ধ আরও বলেন, শহীদ জিয়ার পরিবারের জন্য বগুড়া পূণ্যভূমি। আর সেই ভূমির শিবগঞ্জের মহাস্থান থেকে প্রথম রাজনৈতিক বক্তৃতা সুযোগ পাওয়ায় নিজেকে গর্বিত মনে করছি। খুনী হাসিনা আমার ভাইসহ ২ হাজার ভাই-বোনকে হত্যা করেছে। ২০ হাজার জনকে আহত করেছে। ছোটবেলা থেকে আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীনতা দেখে আসছি। তার আদর্শে উজ্জীবিত হয়েই বিএনপিতে যোগ দেই। খুনি হাসিনার বিচার এ দেশে হতে হবে। তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে দেশজুড়ে জুলাই যোদ্ধাসহ সকল তরুণ-যুবকদের একত্রিত করে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা চিরজীবনের জন্য বিলুপ্ত করবেন বলে জানান।
তিনি বলেন, ১৮ আগস্ট ভাই মুগ্ধ শহীদ হয়। এদিন কোন কবরস্থান আমাদেরকে জায়গা দেয়নি। অনেক চেষ্টা করেও যখন কবর দেয়ার জায়গা পাইনি তখন যেখানে পুলিশের চোখ পড়বে না সেখানে গিয়ে লাশ দাফন করা হয়েছে। আমাদের উপর কতশত হুমকি ধামকি দিয়েছে পুলিশ, আর আওয়ামী লীগ। তবুও আমরা আন্দোলন থেকে দূরে সরে যাইনি। আমরা চিন্তা করেছি খুনি হাসিনার সঙ্গে কোন আপোষ করিনি। মুগ্ধর ভিডিও প্রচার হওয়ার পর খুনি হাসিনার পক্ষে থেকে কর্মকর্তারা বাসায় ব্ল্যাঙ্ক চেক নিয়ে গিয়েছিলো। যেনো আমরা টাকা নিয়ে চুপচাপ হয়ে যাই। আমরা তবুও হাসিনার সাথে আপোষ করিনি। রাজী না হলে আমাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা নিজেদের বাড়িতেও থাকতে পারিনি। বিএনপির কোন নেতাকর্মীও বাসায় বসে ভাত খেতে পারেনি। আমরা এক সাথে খুনি হাসিনার বিচার চাই। আমি আমার ভাইকে শেষ বিদায় দিতে পেরেছি কিন্তু তারেক রহমান উনার ভাইকে শেষ বিদায়ও জানাতে পারেননি। এই জুলুমকারি হাসিনার বিচার আমরা সবাই মিলে করবো।
মীর স্নিগ্ধ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড় পরিদর্শন এবং হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করেন। স্নিগ্ধসহ অন্যান্য বিএনপির নেতাকর্মীরা এতে উপস্থিত ছিলেন। এসময় দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং জিয়া পরিবারের জন্য মোনাজাত করা হয়। কবর জিয়ারত করে মহাস্থানের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখেন। এর আগে মীর স্নিগ্ধকে উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মীর শাহে আলম। হাজারো তরুণ-যুবকের উচ্ছ্বাস ও আবেগঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে স্বাগত জানানো হয় জুলাই যোদ্ধা শহীদ মীর মুগ্ধের জমজ ভাই বিএনপি নেতা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধকে। সমাবেশস্থলে পৌঁছালে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল সহকারে ও ৫ শতাধিক মোটরসাইকেল বহর নিয়ে ঐতিহাসিক মহাস্থানগড় থেকে মীর স্নিগ্ধকে বরণ করে নেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন