সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে একের পর এক আগুন দস্যুতা রোধে করা হচ্ছে নাইলনের ফেন্সিং। এখানে দস্যুদের পরিকল্পিত অপতৎপরতা নিয়ন্ত্রণে ও ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইট এই ম্যানগ্রোভ বনকে পুড়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে লোকালয় সন্নিহিত আরও ১৪ কিলোমিটার এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে নাইলনের বেড়া। এ ছাড়া চরম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় দুটি আরসিসি ওয়াচ টাওয়ার ও ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাঘ-হরিণসহ বন্যপ্রাণীর আশ্রয়ের জন্য মাটির দুটি উঁচু কিল্লা তৈরি হচ্ছে। বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় ৪ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে এসব নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে এসব প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হবে।
বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে আগুন দস্যুরা যাতে সহজে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ইতোমধ্যে লোকালয় সন্নিহিত ২৫ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের ফেন্সিং নির্মাণ শেষ হয়েছে। নতুন করে আরও ১৪ কিলোমিটার এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে নাইলনের বেড়া। একই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট টহল ফাঁড়ি ও ধানসাগর ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির চরম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় দুটি উঁচু আরসিসি ওয়াচ টাওয়ারও নির্মাণ করা হচ্ছে। লোকালয় সন্নিহিত ঝুঁকিপূর্ণ ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাকি ৬ কিলোমিটার এলাকায়ও নাইলনের বেড়া নির্মাণ দ্রুতই শুরু হবে। সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের বৈদ্যমারী থেকে শুরু হয়ে শরণখোলা রেঞ্জের দাসেরভারানী টহল ফাঁড়ি পর্যন্ত বনের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে এ নাইলনের বেড়া ও নাংলি ফরেস্ট টহল ফাঁড়ি ও ধানসাগর ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির চরম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার দুটি উঁচু আরসিসি ওয়াচ টাওয়ারও নির্মাণকাজ শেষ হলে আগুন দস্যুদের অপতৎপরতা নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। এ ছাড়া ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইট এই ম্যানগ্রোভ বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা ও বাঘ-হরিণসহ বন্যপ্রাণীদের লোকালয়ে চলে যাওয়াও রোধ করা যাবে। পাশাপাশি মাটির দুটি উঁচু কিল্লা তৈরির কাজ আগামী মার্চ মাসের মধ্যে শেষ হলে বাঘ-হরিণসহ বন্য প্রাণিকূল ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে পারবে। এ ছাড়া সহসাই নতুন করে সুন্দরবনে অগ্নিনির্বাপক ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম, পন্টুনসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি কেনা হবে- বলেন এই বন কর্মকর্তা।