পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে খুন হন দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার সরোয়ার হোসেন বাবলা। এর আগেও একাধিকবার বাবলাকে খুনের চেষ্টা করা হয়। ওই সময় জীবন রক্ষা পেলেও গত বুধবার তার পক্ষে ছিল না ভাগ্য। খুনের আগেও বাবলাকে হত্যার হুমকি দেয় প্রতিপক্ষ। এর তিন দিন পর বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর প্রচারণায় গেলে ফিল্মি স্টাইলে খুন করা হয় বাবলাকে।
সিএমপির মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আমিনুর রশিদ বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে সরোয়ার হোসেন বাবলা খুন হয়েছে। এ খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পুলিশের একাধিক ইউনিট মাঠে রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এ খুনের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। যতটুকু জেনেছি সরোয়ার বাবলার দাফন-কাফন হওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা মামলা দায়ের করতে আসবেন।’
জানা গেছে, দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার সরোয়ার হোসেন বাবলা ছিলেন আরেক দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার বিদেশে পলাতক সাজ্জাদ আলী ওরফে বড় সাজ্জাদের অনুসারী। সাজ্জাদ-বাবলা জুটি নগরীর বায়েজিদ, চান্দগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার জুট ব্যবসা, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, বালু মহলের নিয়ন্ত্রণসহ সব অপরাধ কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন। ২০২৪ সালের ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর তাদের মধুর সম্পর্ক পরিণত হয় সাপে-নেউলে। এ সময় সরোয়ার বাবলাকে হত্যার একাধিকবার চেষ্টাও করা হয়। হত্যার তিন দিন আগে সাজ্জাদ গ্রুপের অনুসারী মো. রায়হান মোবাইলে হত্যার হুমকি দেন বাবলাকে।
সরোয়ারের বাবা আবদুল কাদের অভিযোগ করে বলেন, বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী ওরফে বড় সাজ্জাদ, তাঁর সহযোগী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও মো. রায়হান প্রায় হত্যার হুমকি দিতেন। একাধিকবার হত্যার জন্য হামলাও চালানো হয়। এ জন্য সরোয়ার সতর্কভাবে চলাফেরা করতেন। খুনের তিন দিন আগে রায়হান মোবাইলে হুমকি দেয়- ‘তোর সময় শেষ। যা খাওয়ার খেয়ে নে।’ এ হুমকি দেওয়ার তিন দিন পর বাড়ি থেকে কয়েক শ গজ দূরে গুলি করে হত্যা করা হয় সরোয়ারকে। এ খুনের বিচার চাই আমরা।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর প্রচারণায় অংশ নেন সরোয়ার হোসেন বাবলা। ছোট সাজ্জাদ গ্রুপের অনুসারীরা সরোয়ার বাবলাকে গুলি করে। এতে এরশাদ উল্লাহ, সরোয়ার বাবলাসহ তিনজন আহত হন। পরে তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে সরোয়ার বাবলাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। সরোয়ারের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন থানায় খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, অস্ত্র আইনসহ বিভিন্ন অপরাধে কমপক্ষে ১৫টি মামলা রয়েছে।