রমজান এলেই আমাদের চারপাশে বদলে যায় এক অন্যরকম আবহ। দিনের শেষে সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে মসজিদে ধ্বনিত হয় আজানের সুর, আর সেই সুরের আহ্বানে রোজাদাররা মিলিত হন ইফতারের টেবিলে। কিন্তু সমাজের প্রতিটি মানুষের কি সে সুযোগ হয়? ইফতারের সময় যখন কেউ বাড়ির খাবার টেবিলে বসেন, তখন কোনো রিকশাচালক হয়তো পথে ক্লান্ত শরীরে বিশ্রাম নিচ্ছেন, কোনো পথশিশু হয়তো অন্ধকার গলিতে শুকনো মুখে তাকিয়ে আছে অথবা কোনো শ্রমজীবী মানুষ হয়তো না খেয়ে পার করছেন রোজার দীর্ঘ সময়। এ বাস্তবতাকে বদলানোর স্বপ্ন নিয়েই বসুন্ধরা শুভসংঘ রাজধানীর মিরপুরের ইব্রাহিমপুরে এবার আয়োজন করেছে অনন্য মানবিক কার্যক্রম মাসব্যাপী ইফতার মাহফিল।
মিরপুরের ইব্রাহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ প্রতিদিন বিকাল হলেই পরিণত হয় অনন্য মিলনমেলায়। বসুন্ধরা শুভসংঘের স্বেচ্ছাসেবীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন ইফতার প্রস্তুতির কাজে। কেউ খেজুর ও শরবত সাজাচ্ছেন আবার কেউ ব্যস্ত আগত রোজাদারদের বসার ব্যবস্থা করতে।
গতকাল পবিত্র রমজানের ষষ্ঠ দিনের উন্মুক্ত ইফতার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মাসুদুর রহমান মান্না। আরও উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রাফিউল আহমেদ বাপ্পি এবং সৌল জাংশনের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মাহিন।
আয়োজনে উপস্থিত হয়ে মাসুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সব ধরনের শুভ কাজের সঙ্গেই বসুন্ধরা শুভসংঘ কাজ করে যাচ্ছে। সারা দেশেই সংগঠনের কার্যপরিধি চলমান। আমরা চেষ্টা করছি সমাজের দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে। ইতোমধ্যে বসুন্ধরা শুভসংঘ সেলাই মেশিন বিতরণ, বিভিন্ন চরাঞ্চলে স্কুল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকা পরিচালনা করে আসছে। তারই অংশ হিসেবে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য মাসব্যাপী ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
এক বৃদ্ধ রিকশাচালক চোখে জল নিয়ে বললেন, ‘এ রকম ইফতারে বসার সুযোগ আমার জীবনে খুব কম এসেছে। এখানে সবাই আমাদের আপন করে নিয়েছেন। মনে হচ্ছে, আমি কারও দয়া নয়, ভালোবাসার দাওয়াতে এসেছি।’