চব্বিশের জুলাই আন্দোলন চলাকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আন্দোলনকারীদের ওপর বর্বর হামলায় জড়িত থাকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৬৪ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করেছে প্রশাসন।
পাশাপাশি অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী ৪৬ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার এবং ৭৩ জন সাবেক শিক্ষার্থীর শিক্ষাসনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে৷ শাস্তিপ্রাপ্ত সবাই নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।গণঅভ্যুত্থানের সময় হামলা-সংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট।
সোমবার (৪ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টায় এক বিশেষ সিন্ডিকেট সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, “হামলাকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২২৯ জন। এর মধ্যে ৯৯ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ১৩০ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত বর্তমান শিক্ষার্থী। বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৪ জনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে ২ বছরের, ৮ জনকে ১ বছরের জন্য ও ১ জনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। হামলায় জড়িত থাকায় সাবেক ৯৯ শিক্ষার্থীদের ৭৩ জনের শিক্ষা সনদ বাতিল ও অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী ৬ জনের সনদ ২ বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।”
গণঅভ্যুত্থানের সময় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সঙ্গে হামলায় যোগ দেওয়া বহিরাগত সন্ত্রাসী ও পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইনের বহির্ভূত বিধায় তাদের বিচারের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল (আইসিটি) পাঠানো হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
৪০ শিক্ষার্থীকে দায়মুক্তি
হামলায় অভিযুক্ত ৪০ জন শিক্ষার্থীকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে৷ এর মধ্যে ২০ জন বর্তমান শিক্ষার্থী ও সাবেক শিক্ষার্থী রয়েছেন আরও ২০ জন। তবে তাদের কিসের ভিত্তিতে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি জানান, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি উত্তর দিলে যথাযথ হবে।
এ নিয়ে অধিকতর তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব বলেন, হামলার সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ না মেলায় অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা কোনও প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ কোনো সাক্ষ্য পাইনি এবং ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করেও তাদের জড়িত থাকার কোনো সূত্র দেখা যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ