বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন গাজীপুরের গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২০ মে) সকালেও তারা রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ফখরুল হাসান ফয়সাল গণমাধ্যমকে জানান, তারা গত রাতেও ইউজিসির সামনেই কাটিয়েছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। কেবল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে যদি নিশ্চিত করা হয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব পরবর্তী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে- তবেই তারা এই কর্মসূচি স্থগিত করবেন।
শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের জন্য চারটি নাম প্রস্তাব করেছেন। এগুলো হলো বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডভান্সড টেকনোলজি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি। এর মধ্যে থেকে যেকোনো একটি নাম নির্ধারণ করার দাবি তাঁদের।
এর আগে, সোমবার (১৯ মে) ‘লংমার্চ টু ইউজিসি’ কর্মসূচির আওতায় শিক্ষার্থীরা গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে পদযাত্রা শুরু করে বেলা সাড়ে ১১টায় ইউজিসির সামনে পৌঁছে অবস্থান নেন। পরে তারা সেখানে রাত কাটান। ইতোমধ্যে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে।
তবে ইউজিসি জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের এখতিয়ার তাদের নেই। এটি একটি আইনগত বিষয় হওয়ায় সরকারই কেবল আইন সংশোধন করে নাম পরিবর্তন করতে পারে। ইউজসি কেবল সুপারিশ করার ক্ষমতা রাখে, যা ইতোমধ্যেই করা হয়েছে।
২০১৬ সালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে স্থাপিত হয় এই বিশেষায়িত প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথমে এর নাম ছিল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ’। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে ‘গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’ রাখা হয়।
শুরুতে ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’ নামকরণের প্রস্তাব থাকলেও শেষ পর্যন্ত ‘গাজীপুর’ যুক্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হন। প্রথমে তারা ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’ নামের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, রেল ব্লকেড, শাটডাউনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন তারা।
আশ্বাসের ভিত্তিতে মাঝেমধ্যে কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও এখনো তাদের মূল দাবি পূরণ হয়নি। এবার তারা চারটি বিকল্প নাম দিয়ে যেকোনো একটি চূড়ান্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের ঘোষণা, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ