ভারতের চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা— ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, ভারত পেট্রোলিয়াম এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড সাময়িকভাবে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ রেখেছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে চারটি সূত্রের বরাত দিয়ে।
তবে এই বিষয়ে সরকারিভাবে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি কিংবা কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক।
রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার বদলে এখন পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির দিকে ঝুঁকছে ভারতীয় সংস্থাগুলি বিশেষ করে আবু ধাবির মতো তেল-সমৃদ্ধ অঞ্চলে অশোধিত তেলের জন্য নির্ভরতা বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্তের পিছনে থাকতে পারে সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক চাপ। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, রাশিয়া যদি আগামী ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ না করে, তা হলে রাশিয়া ও তার বাণিজ্যিক সহযোগী দেশগুলির উপরে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। একইসঙ্গে ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর কথা জানিয়ে, রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার জন্য ভারতের বিরুদ্ধেও জরিমানা ধার্য করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। যদিও সেই জরিমানার অঙ্ক এখনও প্রকাশ্যে আনেনি আমেরিকা।
রাশিয়ার খনিজ তেলের অন্যতম বড় ক্রেতা ভারত। বর্তমানে ভারতের মোট তেল আমদানির প্রায় ৩৫ শতাংশই আসে রাশিয়া থেকে। তবে তেল কেনা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির ফল কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ২০২২ সালে পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞার মুখে রাশিয়া সস্তায় তেল রফতানি করছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে সেই ছাড় অনেকটাই কমানো হয়েছে, যা ভারতীয় সংস্থাগুলির জন্য আর্থিকভাবে আকর্ষণীয় না-ও হতে পারে।
এদিকে, রাশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি তেল আমদানি করে এমন দুটি বেসরকারি সংস্থা— রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং নায়ারা এনার্জির অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়। তারা রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ রেখেছে কি না, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি রয়টার্স।
বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, কূটনৈতিক চাপ এবং বাজারদরের ওঠানামা— এই ত্রিমুখী পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভারতের পেট্রোলিয়াম নীতিতে আসতে পারে বড় রদবদল।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল