‘প্রবাসীর অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার- বৈষম্যহীন বাংলাদেশ আমাদের সবার’—এই প্রতিপাদ্যে নেত্রকোনায় পালিত হলো ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস’। ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা ও সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে নেত্রকোনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) ক্যাম্পাসের হলরুমে এই আয়োজন করে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক।
টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এস. এম. ছাদরুল কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক (ডিডি-এলজি) মো. আরিফুল ইসলাম সরদার।
অনুষ্ঠানে গত এক বছরে দেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠানো দুই প্রবাসীকে সম্মাননা দেওয়া হয়। তাঁদের পক্ষে পরিবারের সদস্যরা ক্রেস্ট গ্রহণ করেন।
সিঙ্গাপুর প্রবাসী মোজাম্মেল হক প্রেরণ করেছেন সর্বোচ্চ ১ কোটি ৬৪ লাখ ৮৬ হাজার ১২৪ টাকা, এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির পাঠিয়েছেন ১ কোটি ১৬ লাখ ৭১ হাজার ৭৯৭ টাকা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ফরহাদ হোসেন, নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ‘জুলাই আন্দোলন’ এর বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়ক রিফাত রেদোয়ান জয়।
এছাড়াও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন বিদেশগমনপ্রত্যাশী যুবকদের সহায়তাকারী এবং সফল প্রবাসীরা- কাতার প্রবাসী নজরুল ইসলাম, সৌদি প্রবাসী মো. মামুন এবং জাপানফেরত মো. সোহাগ মিয়া।
কাতার ও সৌদি প্রবাসী কফিল উদ্দিন বলেন, ‘সবারই উচিত দক্ষতা অর্জনের পর বিদেশে যাওয়া। দক্ষ না হলে কষ্টের সীমা থাকে না। আয় বৈধভাবে পাঠানোর বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার এখন লাখে আড়াই হাজার টাকা বোনাস দিচ্ছে। সবাই সুখের আশায় বিদেশে যায়, কিন্তু অনেকেই সেই সুখ পায় না। যারা সচেতন, তারাই পরিবর্তন আনতে পারে।’
নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুলাই আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক রিফাত রেদোয়ান জয় বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি, গত এক বছরে ৪ হাজার ৮৩০ জন প্রবাসীর মরদেহ দেশে ফিরেছে- গড়ে প্রতিদিন ১৩ জনের মৃত্যু। তাই বিদেশ যাওয়ার আগে নিরাপত্তা ও প্রস্তুতি নিশ্চিত করা জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শ্রমিকদের বিষয়ে সরকার এখনো যথেষ্ট সচেতন নয়। এই সমস্যাগুলো কেন আমরা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তুলে ধরতে পারছি না, তা ভাবার সময় এসেছে।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ