জলবতী মেঘের বাতাস নিয়ে প্রকৃতিতে বাংলার সঘন সজল বর্ষাকাল। বৃষ্টির প্রাকৃতিক পানি পেয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে বেড়েছে ঝোপঝাড়। পরিচ্ছন্নতার অভাবে যেন বিষধর সাপের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে ক্যাম্পাসটি।
আবাসিক হল, রাস্তাঘাটসহ ক্যাম্পাসজুড়ে দেখা মিলছে বিষধর সাপের। ইতোমধ্যেই কয়েকটি গোখরা ও কাল কেউটেসহ ৫০টির অধিক সাপ মেরেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে আবাসিক হলসহ রাস্তাঘাটে চলাচল অনেকটা অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। অ্যান্টিভেনমের ব্যবস্থা না থাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। বৈজ্ঞানিকভাবে সাপের প্রতিরোধ ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আবাসিক ভবন, একাডেমিক ভবন ও হল এলাকায় পাতি কাল কেউটে, কালাচ বা দেশি কালাচ, পদ্ম গোখরা ও খৈয়া গোখরা সাপের দেখা মিলছে। গত এক মাসে প্রায় অর্ধশতাধিক সাপ মারা হয়েছে বলে জানা গেছে। যা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। মেডিকেলে সাপে কাটার চিকিৎসা না থাকায় আরও বেশি আতঙ্কিত তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে সাপে কাটার প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যতীত অ্যান্টিভেনম ব্যবহারের অনুমোদন নেই বলে জানিয়েছেন চিফ মেডিকেল অফিসার। অ্যান্টিভেনম ব্যবহারে অভিজ্ঞ চিকিৎসক এবং সাপোর্টিভ চিকিৎসা না থাকায় ইবির চিকিৎসা কেন্দ্রে অ্যান্টিভেনম ব্যবহার করা হয় না বলে জানান তিনি। শিক্ষার্থীদের দাবি, মেডিকেলে অ্যান্টিভেনম রাখা এবং তা প্রয়োগ করার স্পেশালিস্ট নিয়োগ, ঝোপঝাড় পরিষ্কার ও ক্যাম্পাসের ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নতিকরণ।
হলের আবাসিক হলের শিক্ষার্থী পারভেজ আহমেদ রবিন বলেন, ‘ক্যাম্পাসে পা বাড়ালেই সাপের আতঙ্ক। যেখানে সেখানে দেখা মিলছে গোখরো, কেউটে ও কালাচসহ নানা বিষধর সাপ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে যেকোন সময় সাপের দংশনে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।’
প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে অ্যান্টিভেনামের ব্যবস্থার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ ছাড়া আবাসিক হলসমূহে কার্বলিক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিষাক্ত সাপের দংশন ছাড়া অ্যান্টিভেনাম দেওয়া হলে রোগী মারাও যেতে পারে। কার্ডিয়াক সাপোর্টসহ বিভিন্ন টেস্ট শেষে অ্যান্টিভেনম ব্যবহার করতে হয়।’
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কল্যাণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে অ্যান্টিভেনম এবং এর এক্সপার্ট নিয়োগের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল